গভীর রাতে প্রচণ্ড অন্ধকারে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জে তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত রাত ৩টার দিকে প্রচণ্ড বজ্রবৃষ্টির সাথে সাথে জকিগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয় কালবৈশাখীর তাণ্ডব। দফায় দফায় বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি চলে সকাল ৭টা পর্যন্ত।
কালবৈশাখী ঝড়ে জকিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ে। ঝড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু বাড়িঘরের টিনের চাল উড়ে যায় এবং বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঝড়ের আকস্মিক আঘাতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে; অনেকেই ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের দূর্বল ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলেছে কালবৈশাখী ঝড়। উপজেলার কামালপুর গ্রামের বেশ কয়েকটি ঘরের টিনের চাল ঝড়ে উড়ে গিয়েছে।
কামালপুর (নানখার) এলাকার দিনমজুর তাজুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় খোলা আকাশের নীচে পরিবারকে নিয়ে বসে আছেন। কালবৈশাখী ঝড়ে তার পুরো ঘরের টিন উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে।
অপরদিকে উপজেলার মানিকপুর গ্রামের কাড়াবাল্লা বিদ্যানিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বদরুল আলম জানান, গভীর রাতে ঝড় শুরু হলে তাঁর বাড়ির টিনের ছাউনি ছিঁড়ে পাশের একটি ফসলি জমিতে গিয়ে পড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় পরিবারটি আতঙ্কে জেগে উঠে ছোট একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। ঝড়ের তীব্রতার কারণে বৈদ্যুতিক ফ্যানসহ ছাদে লাগানো বিভিন্ন সামগ্রী ছিঁড়ে উড়ে যায়।অন্যদিকে জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কের শরীফগঞ্জ এলাকায় একটি বিশাল গাছ পড়ে গিয়ে সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাছ অপসারণ করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এছাড়া শুক্রবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে জকিগঞ্জ উপজেলার বহু গ্রামে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলেও প্রায় চব্বিশ ঘন্টা পর শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি গ্রাহকরা। ফলে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুৎ জকিগঞ্জ জোনাল অফিসের নবাগত ডিজিএম সারওয়ার জাহান জানান, আমরা ইতিমধ্যে উপজেলার ৮০% এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সক্ষম হয়েছি। আমিসহ আমার টিম এখনো মাঠে কাজ করছি। আজ রাতের মধ্যেই বাকি সব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার চেষ্টা করছি।
Leave a Reply