অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত রাত পোহালেই জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতানপুর ইউনিয়ন-এর গণিপুর স্থগিত কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। এ ভোট কেন্দ্র-ই নির্ধারণ করবে কে হচ্ছেন সুলতানপুর ইউনিয়ন-এর পরবর্তী চেয়ারম্যান। একই সাথে একজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও একজন সাধারণ সদস্যের ভাগ্য নির্ধারণ হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। এখন পুরো উপজেলাবাসীর নিকট একই প্রশ্ন গণিপুর ভোটকেন্দ্র কি বার্তা দিচ্ছে সুলতানপুর ইউনিয়নবাসীকে। কেননা এই ভোট কেন্দ্র স্থগিত হওয়ায় ৩ জন প্রার্থী ভাগ্য নির্ধারণ করা আজও সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদে অনেক ৮২৫ ভোটে এগিয়ে থাকা বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বিজয়ে শেষ হাঁসি এখনো হাসতে পারেননি। তবে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে তিনিই বিজয়ী হবেন বলে মনে করছেন ইউনিয়নবাসী।
জানা যায়, পঞ্চম ধাঁপে গত ৫ই জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুলতানপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের গণিপুর ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। স্থগিত হওয়া কেন্দ্রটির ফল ছাড়া বাকি ৯টি ভোট কেন্দ্রের ফল অনুযায়ী বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ রফিকুল ইসলাম আনারস প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩ হাজার ৮শ ১৫টি, বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান আহমদ চশমা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৯শ ৯০টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল আহমদ চৌধুরী একল নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১ হাজার ১শ ১৭টি, জাতীয় পার্টি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ রিমন আহমদ চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১ হাজার ১শ ১৬টি, জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ জালাল উদ্দিন টেবিল ফ্যান প্রতীকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে ভোট পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭টি, খেলাফত মজলিস ঘরানার সাবেক চেয়ারম্যান হাজী বুরহান উদ্দিন ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে পেয়েছেন ৮শ ৩১টি ভোট ও জাতীয় পার্টির আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী প্রবাসী মোঃ আনোয়ার হুসেন হেলালী মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে ভোট পেয়েছেন ৩শ ৫৭টি।
প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোটের হিসাবে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম অনেক দূর এগিয়ে থাকলেও নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপি ঘরানার হাসান আহমদ শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থগিতকৃত ৬নং ওয়ার্ডের এ ভোট কেন্দ্রে সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮শ ৪১ জন।
এদিকে ২৩ জানুয়ারী রোববার জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতানপুর ইউনিয়নের বিতর্কিত নির্বাচন কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল নিশি জারি করে হাইকোর্ট। একই সাথে নির্বাচন কমিশনে পিটিশনারদের দায়েরকৃত দরখাস্ত নিষ্পত্তিরও নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের এই রুল জারি’র ফলে পুরো উপজেলা জুড়ে এই কেন্দ্রের ভোট হবে কি হবে না এনিয়ে ছিল নানা জল্পনা ও কল্পনা। তবে শেষ পর্যন্ত ভোট গ্রহণের বিষয়টি চুড়ান্ত হওয়ায় সেই জল্পনা ও কল্পনার অবসান ঘটেছে। তবে এনিয়ে সাধারণ মানুষের মনে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
এ প্রসঙ্গে সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শুক্কুর মাহমুদ মিঞা বলেন, স্থগিত ভোট কেন্দ্রে ভোট না নিতে হাইকোর্ট থেকে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। হাইকোর্ট থেকে নির্বাচন কমিশনের নিকট জবাব চাওয়া হয়েছে। আগামী মার্চ মাসে এ জবাব দেয়ার কথা।
Leave a Reply