1. admin@zakiganjsangbad.com : admin :
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জকিগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করলেন শাহবাগ জামিয়া’র মুহতামীম মাওলানা আব্দুল হাফিজ জকিগঞ্জের গোটারগ্রামে ইত্তেহাদুল কুরআন পরিষদের নতুন কমিটি গঠন জকিগঞ্জে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই শনিবার জকিগঞ্জ আসছেন জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভা অনুষ্ঠিত জকিগঞ্জ থানার নতুন ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্না জকিগঞ্জে জনকল্যাণে ১০ কোটি টাকার তহবিল নিয়ে ফাহিম আল ইসহাক চৌধুরী ট্রাস্টের যাত্রা শুরু জকিগঞ্জ শাহগলি বাজার মনিটরিংয়ে ১৫ হাজার ৫’শ টাকা জরিমানা জকিগঞ্জ-শেওলা ভাঙ্গা সড়কে চরম দুর্ভোগ জকিগঞ্জে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে সুরানন্দপুর সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়

জকিগঞ্জের মানচিত্র গিলে খাচ্ছে রাক্ষুসে কুশিয়ারা নদী

রহমত আলী হেলালী
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৬০৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

জকিগঞ্জে রাক্ষুসে কুশিয়ারা নদী একে একে গিলে খাচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণের মানচিত্র। আর এতে ছোট হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড আর বড় হচ্ছে ভারতের মানচিত্র। কেননা বাংলাদেশ-ভারত পৃথক দু’টি রাষ্ট্রের জকিগঞ্জ সীমান্ত টানা হয়েছে কুশিয়ারা নদী দিয়েই। সে কারণে কুশিয়ারা নদীর এপার ভাঙ্গলে ছোট হচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র আর ভরাট হচ্ছে ওপার ভারতের মানচিত্র।

জানা যায়, সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলাবাসীর প্রধান সমস্যাই নদী ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ ভিটামাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তাই নদী পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম কুশিয়ারা নদী ভাঙ্গন। প্রতিবছরই জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়। এতে বসতভিটা ও জায়গা-জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে শতশত পরিবার। একে একে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও গোরস্থানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর এমন রাক্ষুসে অবস্থানের ফলে শুধুমাত্র নদী পাড়ের মানুষের স্বপ্ন নয় বরং ধীরে ধীরে বাংলাদেশের মানচিত্র গিলে খেতে শুরু করেছে।
কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জকিগঞ্জ পৌর এলাকার কেছরী, ছয়লেন, মাইজকান্দি, জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ছবড়িয়া, শরিষা, মানিকপুর, বাখরশাল, লালোগ্রাম সেনাপতিরচক, রারাই, বিরশ্রী ইউপির বড়চালিয়া, পিয়াইপুর, বারজনী, উজিরপুর, খলাছড়া ইউপির লোহারমহল, সুনাপুর, পশ্চিম ও পূর্ব সুপ্রাকান্দি, বেউর, সুলতানপুর ইউপির, অজরগ্রাম, গঙ্গাজল, সহিদাবাদ, বক্তিপুর, পিল্লাকান্দি, ইছাপুর, খাদিমান, বারঠাকুরী ইউপির উত্তরকুল, লাড়িগ্রাম, বিন্নাপাড়া, মুন্সিপাড়া, বলরামেরচক, নিয়াগুল ও ছালেহপুর গ্রাম কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে।
অতিসম্প্রতি জকিগঞ্জ পৌরসভার মাইজকান্দি ও জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ছবরিয়া গ্রামে কুশিয়ারা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনে ছবরিয়া গ্রামের মৃত ইসহাক আলীর ছেলে হতদারিদ্র বাদল আহমদের বসতঘরের এক অংশ কুশিয়ার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। একই গ্রামের গোরস্থান ও আকরাম আলীর বাড়ি চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। পার্শ্ববর্তী মাইজকান্দি গ্রামের আব্দুস ছালামের বাড়িটিও রয়েছে ভয়ংকর ঝুঁকিতে।
কুশিয়ারা নদীর এমন ভয়ংকর তান্ডবে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন নদী পাড়ের শতাধিক মানুষ।
ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রতি বছর কুশিয়ারা নদী আমাদের জমি একটু একটু করে ভেঙ্গে নিয়ে যায়। আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ সবাইকে অবহিত করলে সবাই উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপি সাহেবকে বলে কোন ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে যান। কিন্তু বছরের পর বছর চলে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়না।
ছবরিয়া গ্রামের মৃত ইসহাক আলীর পরিবারের লোকজন জানান, এখন নদীটি যেখানে ভাঙ্গছে, সেখানে আমাদের বসতঘর ছিল। তাই ঘরটি এখন সরিয়ে নিয়েছি। এরপর আর জায়গা নেই। আর নদী ভাঙ্গলে কি করবো জানিনা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মুকিত নদী ভাঙ্গনের কথা শিকার করে বলেন, ভয়াবহ ভাঙ্গন প্রতিরোধে আমার কিছু করার নেই। তবে আমি উপর মহলের সকলকে অবগত করেছি। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাওলানা আফতাব আহমদ বলেন, বিগত কয়েক বছরে মাইজকান্দি, ছবরিয়া ও শরিষা গ্রামের প্রায় এক হাজার বিঘা জমি কুশিয়ারা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমার নিজের প্রায় ৬০/৭০ বিঘা জমি এখন নদীগর্ভে। এ বিষয় নিয়ে বিগত সংসদ সদস্যকে একাধিকবার বলেছি। আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোন কাজ হয়নি। দেশের অভ্যন্তরীণ নদী ভাঙ্গন রোধে দেশের কোটি কোটি টাকা ব্যায় করা হলেও সীমান্ত নদী কুশিয়ার’র ভাঙ্গন রোধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। যার ফলে দিন দিন বাংলাদেশের ভূখণ্ড ভেঙ্গে ছোট হচ্ছে আর ভারতের ভূখণ্ড ভরাট হচ্ছে। তিনি মনে করেন, জকিগঞ্জের নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে সংসদে জোরালোভাবে উপস্থাপন করা হলে তা দ্রুত সমাধান হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা ও উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাহফুজুর রহমান ভূইয়া বলেন, অতিসম্প্রতি আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘুরে সব ক’টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান নির্ধারণ করে লিখিতভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃকপক্ষের নিকট প্রেরণ করেছি। পাশাপাশি জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লোকমান উদ্দিন চৌধুরীসহ আমরা নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী মহোদয়কে লিখিত ও মৌখিকভাবে অবগত করেছি।
এ বিষয়ে আলাপকালে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর যে ক’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করেছি তন্মধ্যে নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি অন্যতম। আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেছি। চলতি সংসদ অধিবেশনে এনিয়ে আমি কথা বলবো ইনশাআল্লাহ।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
জকিগঞ্জ সংবাদ-এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
প্রতিষ্ঠাতা: রহমত আলী হেলালী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট