জকিগঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক অমুসলিম তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক বার ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারী) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত/০৩) এর ৯(১) ধারায় ওই তরুণী জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। জকিগঞ্জ থানার মামলা নং ১১, তারিখ: ২৫/০১/২০২২ খ্রিস্টাব্দ।
এ মামলায় জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত মঙ্গলপুর (জিয়াপুর) গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে জুবায়ের আহমদ (২৫)কে একমাত্র আসামী করা হয়।
এদিকে অভিযোগ প্রাপ্তির পর সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ও জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাকির হোসেন-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও দিকনির্দেশনায় জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কাসেম তাৎক্ষণিক মামলা রেকর্ড করে আসামী ধরতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই/ এ বি এম জহিরুল ইসলামকে নির্দেশ প্রদান করেন। নির্দেশ পেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই/এ বি এম জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে টিম জকিগঞ্জ-এর পুলিশ সাথে সাথে অভিযান চালিয়ে আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ওইদিন-ই আদালতের মাধ্যমে ধর্ষক জুবায়ের আহমদকে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
এজহার সুত্রে জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়ন-এর ৯নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত মানিকপুর গ্রামের জনৈক অমুসলিম (হিন্দু) তরুণীর ভাইয়ের পরিচয়ের সূত্রধরে বেশ কয়েক মাস ধরে একই ইউনিয়ন-এর ৪নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত মঙ্গলপুর (জিয়াপুর) গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে জুবায়ের আহমদ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত বছরের ৫ জুন প্রেমিক জুবায়ের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে ওই অমুসলিম তরুণীকে রাত সাড়ে সাতটায় বসতঘরের পেছনের বাঁশ ঝাঁড়ের পাঁশে খালি জায়গায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক যৌন মিলন করে। এরপর থেকে প্রেমিক জুবায়ের ওই অমুসলিম তরুণীর সাথে মোবাইল ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ চালিয়ে যায় এবং শীগ্রই বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়ে ১/২ দিন পরপর একই স্থানে যৌন মিলন করতে থাকে। একপর্যায়ে ওই তরুণী গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রেমিক জুবায়েরকে জানালে সে ধর্য্য ধরার কথা বলে ক্রমেই যোগাযোগ কমিয়ে গত ২ মাস থেকে একেবারেই কথা বার্তা বন্ধ করে দেয়। এদিকে তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ৭/৮ মাস হয়ে গেলে শারীরিক গঠন পরিবর্তন হলে পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি বলতে বাধ্য হয়। পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানারপর ওই প্রেমিকের সাথে যোগাযোগ করলে সে তা অস্বীকার করে। পরবর্তীতে ওই অমুসলিম তরুণী নিরূপায় হয়ে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পরামর্শে থানায় মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কাসেম বলেন, জকিগঞ্জ থানা পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে। আমরা যে কোন অপরাধ ও অপরাধীর খবর পাওয়া পর সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। যখনই কোন ঘটনার খবর পাই তখনই টিম জকিগঞ্জ-এর পুলিশ তদন্তপূর্বক তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। আমরা এই অমুসলিম তরুণীর অভিযোগ পেয়ে মামলা রেকর্ড করে তাৎক্ষণিক আসামী ধরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছি।
Leave a Reply