প্রযুক্তির উৎকর্ষে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। দেশের নানা ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। সরকারের নানা সেবা এখন ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়ণের প্রথম শর্ত সর্বত্র ইন্টারনেট সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং এর খরচ জনসাধারণের হাতের নাগালে রাখা। শতভাগ মানুষকে না পারলেও প্রতিটি পরিবারকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসতেই হবে। নয়তো ডিজিটাল বাংলাদেশ কাগজ-কলমেই আটকে থাকবে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জের সবর্ত্র ইন্টারন্টে সমস্যা বিদ্যমান। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক থেকে শুরু করে সকলেই মোবাইল অপারেটারগুলোর নেটওয়ার্ক সমস্যার কথা বার বার তুলে ধরছেন। তাদের মতে, ২০২১ সালে সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার পূরণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক থাকা আবশ্যক। অথচ নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে জকিগঞ্জের মানুষ এখনো ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বাদ গ্রহণ করতে পারছেনা।
আইসিটি খাতকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখনও সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া যায়নি। তাই মানুষ মোবাইল নেটওয়ার্কের ওপর বেশি নির্ভরশীল। জকিগঞ্জে এখন সমস্যার একটা বড় নাম এই মোবাইল ইন্টারনেট। সীমান্তবর্তী এ জনপদের মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার তো দূরের কথা, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে কথা বলতে পারছেনা বলে অভিযোগ অনেকের। এ কারণে সুদূরপ্রসারী সাফল্য পেতে ওয়াইফাই জোন ও নেটওয়ার্কের কাভারেজ এরিয়া বাড়াতে হবে, যেন প্রত্যেক নাগরিক যে কোনো স্থান থেকে এসব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা পেতে পারে। জকিগঞ্জের অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে এখনও থ্রিজি নেটওয়ার্ক নেই, আবার অনেক জায়গায় ইন্টারনেট পেইজ ওপেনই হয় না। এ জায়গাগুলোকে অতি দ্রুত চিহ্নিত করে নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। একটা বিশেষ কল সেন্টার হতে পারে যেখানে মানুষ ফোন করে তাদের এলাকার নেটওয়ার্ক সমস্যা জানাবে এবং সরকারি তদন্ত টিম তা পর্যবেক্ষণ করে সমাধানের ব্যবস্থা নেবে।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি সমস্যা প্রায় সব এলাকাতেই বিদ্যমান। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে যেমন ছড়িয়ে দিতে হবে ব্রডব্যান্ড সংযোগ, তেমনি এর গতির দিকটিও নিশ্চিত করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্রডব্যান্ড ব্যবসায়ীরা ক্যাপাসিটির বেশি সংযোগ দেয়ায় নেট স্পিড শেয়ার হয়ে কমে যায়।
এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। সরকার তার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সেবাসমূহ ইন্টারনেটে প্রদান করছে। আর আমরা নাগরিকরা যদি স্লো নেট স্পিডের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় অপচয় করি, তাহলে ডিজিটাল হওয়ার সুফল পাওয়া কি আদৌ সম্ভব হবে?
এ কারণে মোবাইল ফোনের দুর্বল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটের ধীরগতি সমস্যার সমাধান করে গুণগত ও মানসম্মত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন।
Leave a Reply