মাননীয়
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস চাচা,
আসসালামু আলাইকুম
চিঠির পয়লা সিলট’র শেষ সীমানার জকিগঞ্জ উপজেলার গাউ-গেরামর লাখ লাখ হতভাগা, আউয়া-জাউয়া অবহেলিত জনগণর পক্ষ থাকি আমি বেহায়া, বেইজ্জত, জনম দুঃখী, কপাল পুড়া, আদুম-ছুদুম জকিগঞ্জী চাচার সালাম ও শুভেচ্ছা নিবায়।
পরসমাচার চাচা,
আপনে নিশ্চয়ই জানরা সিলেট জেলা থাকি প্রায় একশো কিলোমিটার দূরে আমরার জকিগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলার কেউ বেমার আজার পড়লে পয়লাউ জকিগঞ্জ হাসপাতালে লইয়া যাওয়া অয়। ইকানো লইয়া গিয়া ভালা চিকিৎসা না পাইলে অউ একশো কিলোমিটার দূর সিলেট ওসমানী হাসপাতালে রোগী নেওয়ার লাগে। হিকানে রোগী নিতে নিতে অনেকে পথর মাঝে মরি যাইন। বিষয়টা একেবারে সত্যিই চাচা।
এরলাগি চাচা,
আমরার জকিগঞ্জ সরকারী হাসপাতাল ইকান অন্য উপজেলা থাকি গুরুত্বপূর্ণ। এই হাসপাতালে রোগী যেলা বেশী আইন অলা রোগীর চাহিদাও বেশী থাকে। হকলে মনে করে ওসমানীতে একশো কিলোমিটার না গিয়া জকিগঞ্জ হাসপাতালে যাইগি। অউ গিয়া এই হাসপাতালে রোগী বেশী আইন আর চিকিৎসার চাহিদাও বেশী। শুধু এই উপজেলার না, আমরার ধারোর কানাইঘাট উপজেলার অনেক রোগী আমরার জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে আইন।
ও চাচা,
আপনে হুনলে অবাক অইবা, ওতো গুরুত্বপূর্ণ একটা হাসপাতালের অবস্থা বেঅবস্থা। ডাক্তার নাই পর্যাপ্ত, নার্স নাই ঠিক মতো, কর্মচারী নাই রীতিমতো ! হাসপাতালে গেলে ইতা ফাইবায় তে হিতা ফাইতায় নায়! আখতা গেলে জরুরী বিভাগে ফাইবা কর্মচারী একজন বওয়াত। হাসপাতালে হামানির পরে বেশীর ভাগ নোংরা পাওয়া যায়। বাথরুম ইকনাইনতর অবস্থা তো খওয়ার মতো নায়। বিশুদ্ধ পানি পাইতায় নায় সব সময়। হাসপাতালের বেড, চাদর, বালিশ ও বালিশর কাভার মাঝে মাঝে দেখলে ঘিন করে। খাওয়া দাওয়ার পরিবেশও বেশ ভালা নায়।
চাচা গো,
জকিগঞ্জ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষর একমাত্র সরকারি সেবা পাওয়ার এই হাসপাতালর কাজ কাম এখনো ৩১ শয্যার হিসেবে চলের। বারো বছর আগে ৫০ শয্যা হাসপাতাল করার লাগি নতুন একটা বিল্ডিং করলেও ইকটা এখনো চালু অইছেনা। ইতা হুনিয়া আর দেখিয়ারে বাবা আমি বেয়াক্কল। মাঝে মাঝে হাসপাতালে গেলে দেখি এনজিও একটায় কাজ চালার। অথচ আগর ৩১ শয্যার বিল্ডিংয়ে মানুষ জায়গা না অইয়া দাইরে চাইছে হুতিরা। ডিফাডিফি কররা রোগী অখলে। ইতা ডিফাডিফি করতে গিয়া কেউরর বেমার কমা তইয়া বাড়া শুরু অইযায়।
দয়ার চাচা,
আমরারে ইতা কষ্ট থাকি একটু রক্ষা করো। সবচেয়ে দূরের উপজেলা হিসাবে জলদি কোন ব্যবস্থা নেও। পারলে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীর সম্পূর্ণ পোস্ট পুরা করি দেও। ৩১ শয্যা হাসপাতাল অখানরে ৫০ শয্যা করি জলদি দিলাউ। ইতা করি না দিলে এই অবহেলিত গাউ গেরামর কষ্টের শেষ থাকতো নায়।
জানি চাচা,
আপনি এই চিঠিটা পড়তা নায়। যদি কোনভাবে এই চিঠি আপনে পড়েন, তাইলে আপনে আপনার দয়ার নজর দিয়া আমরার গাউ গেরামর চিকিৎসার একমাত্র জায়গা জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতাল ঠিক ঠাক করিয়া গাউ-গেরামর লাখ লাখ হতভাগা, আউয়া-জাউয়া অবহেলিত জনগণর উপকারটা করবা।
ইতি
আপনার আদুম-ছুদুম
জকিগঞ্জী চাচা
Leave a Reply