1. admin@zakiganjsangbad.com : admin :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জকিগঞ্জে বন্যায় হারিয়ে গেছে পানিবন্দি মানুষের ঈদ আনন্দ জকিগঞ্জের পানিবন্দি মানুষের আকুতি: ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই! জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: ডাইক রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা এলাকাবাসীর জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে ফাহিম আল চৌধুরী ট্রাস্টের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত জকিগঞ্জে ভেঙে গেছে কুশিয়ারা ডাইক: পানিতে তলিয়ে গেছে জকিগঞ্জ শহর! জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধে ফাটল: আতঙ্কিত উপজেলাবাসী জকিগঞ্জে সাড়ে তিন বছর পর চেয়ারম্যান হচ্ছেন বিএনপি নেতা হাসান আহমদ জকিগঞ্জের মাওলানা ক্বারী খলিলুর রহমান পবিত্র ওমরাহ পালনে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মক্কায় ইন্তেকাল জকিগঞ্জে চালের ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা বিক্রি করতেন ময়নুল! উচ্চ আদালতের রায়ে দায়িত্ব ফিরে পেলেন জকিগঞ্জের ৬নং সুলতানপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম

জকিগঞ্জে বন্যায় হারিয়ে গেছে পানিবন্দি মানুষের ঈদ আনন্দ

রহমত আলী হেলালী
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫
  • ৪০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

বছর ঘুরে ত্যাগ ও আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। পশু কোরবানি, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ নিয়ে দেশবাসী ‍উদযাপন করছেন ঈদ। তবে ভয়াবহ বন্যার শিকার সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার অনেক পরিবারেই এ আনন্দের দেখা নেই। তারা ব্যস্ত জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াইয়ে। ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বন্যা আক্রান্ত মানুষ এখন দিশেহারা।

শুক্রবার (৬ জুন) জকিগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বানিবন্দি এলাকা ঘুরে এমন করুন দৃশ্য চোঁখে পড়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বিগত সাপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল এবং কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে জকিগঞ্জ উপজেলার ২৫/৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়ে যায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েন জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, খলাছড়া ইউনিয়ন, সুলতানপুর ইউনিয়ন, বীরশ্রী ইউনিয়ন ও কাজলসার ইউনিয়নের হাজারো পরিবার। পবিত্র ঈদুল আজহার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এমন ভয়াবহ বন্যায় চরম বিপাকে পড়তে হয় বন্যা কবলিত এলাকার মানুষকে। কুশিয়ারা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকার পার্শ্ববর্তী গ্রাম সমূহের শতশত পরিবার কুরবানীর পশু ক্রয় কিংবা ঈদের প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগই পাননি। তাই জকিগঞ্জের এবারের বন্যায় হাজারো পরিবারের ঈদ আনন্দ হারিয়ে গেছে।
জকিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের গৃহিনী দিলু বেগম বলেন, বন্যায় তলিয়ে গেছে বসতঘরসহ যাবতীয় মালামাল। বর্তমানে তিনি ৫ সদস্যের পরিবারকে রান্নাবান্না করে খাওয়ানোর কোন সুযোগ পাচ্ছেন না। ঈদের আনন্দ বলতে তাদের পরিবারে অবশিষ্ট কিছুই নেই।কুরবানী দেয়া তো দূরের কথা এখন ঘর মেরামত কিভাবে করবেন তা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।
শেখপাড়া গ্রামের সুবহান মিয়া বলেন, আগে আমি খুব কষ্ট করে একটা ঘর তৈরি করে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে মোটামুটি ভালো ভাবে চলছিলাম। কিন্তু বন্যায় আমার সব শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে সবকিছু কিনতে হচ্ছে। ঘর তৈরি করতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে কোন অনুদান পাইনি। আমাদের পরিবারের ঈদ আনন্দ বলতে কিছুই নেই।
মাদারখাল গ্রামের নাজমা বেগম বলেন, নদী ভেঙে বসতঘরে পানি ঢুকে গিয়েছিল। গতকাল চেয়ারম্যানসহ এলাকার লোকজন ডাইক বন্ধ করায় ঘর থেকে পানি নেমে গেছে। এখন বসতঘর পরিস্কার করা এবং জিনিসপত্র শুকানো আমাদের জন্য বড় কাজ হয়ে পড়েছে। আমাদের ঈদ বলতে কিছুই নেই।
কাপনা গ্রামের আমিন মিয়া বলেন, এমনিতেই আমরা গরীব মানুষ। আমাদের ঈদ তো এমনিতেই নেই। তবুও বন্যা না আসলে বাচ্চারা কিছু আনন্দ ফুর্তি করতো, তাও এখন শেষ।
জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী রারাইগ্রামের বিধবা রহিমা বেগম বলেন, স্বামী মারা গেছেন অনেক আগে। ৪ সন্তান নিয়ে এমনিতেই বেকায়দা রয়েছেন। তারমধ্যে বন্যায় বসতঘর নষ্ট করে দিয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন তা চিন্তা করে তিনি কিছুই পাচ্ছিননা। এইবার ঈদ বলতে তাদের কোন কিছু নেই।
একই ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামের ভাঙা ডাইকের পানিতে ঘর হারানো জালাল উদ্দিন বলেন, আমাদের ঈদ বলতে কিছু নেই। কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে আমার পুরো ঘর তছনছ করে দিয়েছে। এ ক্ষতি কেটে উঠার কোন উপায় দেখছিনা। ঈদ আমার পরিবারের নেই।
ব্যবসায়ীরা জানান, জকিগঞ্জে এবারের ঈদে কাপড়ের দোকান ও পশুর হাটেও বন্যার প্রভাব পড়েছে। অন্যন্য বছর বিপনী বিতানগুলোতে সপ্তাহ খানেক আগে ভিড় লেগে থাকলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত উপজেলার একাধিক বাজার ফাঁকা রয়েছে।
জানা যায়, এবারের বন্যায় জকিগঞ্জের কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিলেও বর্তমানে পানি কমে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও বহু মানুষ এখনও আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। অনেকের বাড়ি ফেরা নিয়ে এখনও অনিশ্চিতা রয়েছে। ফলে এসব বানভাসিদের মধ্যে এবার ঈদের আনন্দ নেই।
বর্তমানে জকিগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রারাই, বাখরশাল, মানিকপুর, মুমিনপুর, ভরণ সুলতানপুর, ছবরিয়া, শস্যকুড়ি, হাইল ইসলামপুর, আনারশী, রহিমখারচক, হোসনাবাদ, কান্দিগ্রাম, গদিরাশী, গুলাখাই, সেনাপতিরচক, খলাছড়া ইউনিয়নে ঈদগাহ বাজার, লোহারমহল, কাপনা, শেখপাড়া, ধলিগাঁও, গাগলাজুর, জালালপুর, ইসলামপুর, ষাটশৌলা, সুলতানপুর ইউনিয়নের ইছাপুর, রহিমপুর, পাঠানচক, সখড়া, ফলাহাট, ইলাবাজ, শিতলজুড়া, সাতঘরি,ভক্তিপুর, সহিদাবাদ, আনন্দপুর, বীরশ্রী ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি, মাঝরগ্রাম, লাফাকোনা, পশ্চিম জামডহর, উজিরপুর ও ঈদগাহ বাজার এলাকাসহ কাজলসার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম বন্যা কবলিত রয়েছে। গত দু’দিনে পানি কিছুটা কমেছে। নদীর তীরবর্তী এলাকা এখনও ডুবে রয়েছে। রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত।
এ বিষয়ে জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় আমরা দু’দফা ত্রাণ (চাল) বিতরণ করেছি। ঈদের জন্য আলাদাভাবে কোন বরাদ্ধ দেয়া হয়নি। তবে ঈদের দিন সকালে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরতদের মধ্যে খাবার পরিবেশন করা হবে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
জকিগঞ্জ সংবাদ-এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
প্রতিষ্ঠাতা: রহমত আলী হেলালী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট