দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে নির্বাচনের প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হচ্ছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপি নেতা হাসান আহমদ। বহস্পতিবার (২৯ মে) জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে হাসান আহমদকে ৭৮ ভোটে বিজয়ী বলে রায় প্রদান করেছে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, সিলেট। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট বারের সিনিয়র আইনজীবী ও সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।
আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা হাসান আহমদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীর মধ্যে আনন্দ উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে। আদালত চত্বরে তাৎক্ষণিক তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সহ সভাপতি ও জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপি নেতা এপিপি এডভোকেট মোস্তাক আহমদ, জকিগঞ্জ বিএনপি নেতা আব্দুস শহীদ চুনু, ফয়জুল ইসলাম ও সুলতান আহমদ সহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ই জানুয়ারী জকিগঞ্জ ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আফতাব আহাদকে ৩ হাজার ১৩৭টি ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলাফলে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা হাসান আহমদ ২ হাজার ৯৭৮টি ভোট পেয়েছেন বলে জানানো হয়। বিজয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ১৫৯ ভোটের ব্যবধান দেখানো হলে তাৎক্ষণিক ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ করেন হাসান আহমদ। তিনি ভোট পুনঃগণনার জন্য আবেদন করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীবের কাছে। কিন্তু পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর অভিযোগ পাওয়ার পরও রিটার্নিং কর্মকর্তা তা আমলে নেননি। কোন প্রতিকার না পেয়ে হাসান আহমদ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, সিলেটে ৭টি কেন্দ্রে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
আদালত দীর্ঘ শুনানি ও ভোট গণনা করে চেয়ারম্যান আফতাব আহমদ থেকে ৭৮টি ভোট বেশী ভোট পাওয়ায় নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপি নেতা হাসান আহমদকে বিজয়ী বলে রায় প্রদান করেন।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান আফতাব আহমদকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমার জানামতে নির্বাচনে কোন ভোট কারচুপি বা জালিয়াতি হয়নি। বিষয়টি আমি আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি। এ কারণে শেষ দিকে মামলা পরিচালনা করিনি।
অপরদিকে আদালতের রায়ে বিজয়ী প্রার্থী হাসান আহমদ বলেন, জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছিল, কিন্তু কারচুপি ও জালিয়াতির মাধ্যমে আমার ফলাফল ছিনিয়ে নেয়া হয়। আদালত ভোটগণনা শেষে চেয়ারম্যান আফতাব আহমদ থেকে ৭৮ টি ভোট বেশী পাওয়ায় আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আদালতে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমার এ বিজয় শুধু আমার একার নয়, এ বিজয় পুরো জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নবাসীর। বাকি অল্পদিনে তিনি যেন সকলের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
Leave a Reply