সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে ধানের শীষ প্রতীক না দেয়া হলে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও কাজলসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব চেরাগ আলী। সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে জকিগঞ্জ উপজেলার কামালপুর ঈদগাহ মাঠে বিএনপি নেতা প্রয়াত আব্দুল বাছিতের শোকসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এমন হুমকি প্রদান করেন। তাঁর এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবাদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম সুমনের পরিচালনায় আয়োজিত এ শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও সিলেট-৫ আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপি নেতা চেরাগ আলী বলেন- “কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আপনারা মাঠের দিকে লক্ষ রাখুন। মাঠের কর্মীরা মূল্যায়ন পাচ্ছেন না। মাঠের কর্মীরা মূল্যায়ন পেলে আজকে কেন এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করে স্থগিত রাখা হয়? উচিত ছিল এই আসন ধানের শীষকে দেওয়ার। আমরা এ আসনে বারবার নির্যাতিত। আমরা বিএনপি নেতাকর্মীরা একে একে পাঁচবার এ আসন থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা মাঠে কাজ করে দলের অবস্থান শক্ত করি, আর পরে এসে ফল খায় অন্য দলের লোকজন। তিনি বিএনপি নেতৃবৃন্দের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন- আমার নিজের ঘরে ‘মা’ রেখে চাচীকে কেন ‘মা’ ডাকবো? আমার ঘরে ‘বাবা’ রেখে কেন পাঁশের বাড়ির লোককে ‘বাবা’ ডাকবো? তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সহিত বিবেচনার জন্য বিএনপির নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। নতুবা দলের নেতাকর্মীরা বারবার বিভ্রান্ত হবেন।
তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে আরও বলেন- ” এই জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে ধানের শীষের প্রতীক দিন, না হয় আমরা কিছু মানুষ মারা যাবো। আমরা কিছু মানুষ আত্মহত্যা করবো। যদি আমরা ধানের শীষ প্রতীক না পাই, তাহলে ফুলের গাছ মামুন ভাইকে নিয়ে আমরা মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি করবো।
তিনি বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন- দলকে পেছনে ফেলবেন না, দলকে দূর্বল করবেন না, আমাদের নিয়ে অন্য দলের লোকজন যেন এলোমেলো না হয়।
তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন- এ আসনে যেন এবার ধানের শীষের প্রার্থী দেয়া হয়।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান, সহ সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সেলিম, কানাইঘাট বিএনপির সহ সভাপতি ওয়েছ আহমদ, জকিগঞ্জ পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস শাকুর, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মাসুক আহমদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক সামসুল ইসলাম লেইছ, উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মঞ্জুর আলম ও উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কামরুল ইসলাম প্রমূখ।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির সাথে জমিয়তের নির্বাচনী জোট হয়ে গেলে সিলেট-৫ আসনটি এবারো জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দল্লাহ ফারুককে ছাড় দিতে পারে বিএনপি। কেননা তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হয়ে এ আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন। আসনটি আগামী নির্বাচনেও বিএনপির হাত ছাড়া হওয়ার ভয়ে ধানের শীষের সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
Leave a Reply