1. admin@zakiganjsangbad.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জকিগঞ্জে জনকল্যাণে ১০ কোটি টাকার তহবিল নিয়ে ফাহিম আল ইসহাক চৌধুরী ট্রাস্টের যাত্রা শুরু জকিগঞ্জ শাহগলি বাজার মনিটরিংয়ে ১৫ হাজার ৫’শ টাকা জরিমানা জকিগঞ্জ-শেওলা ভাঙ্গা সড়কে চরম দুর্ভোগ জকিগঞ্জে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে সুরানন্দপুর সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয় জকিগঞ্জে পুলিশের হাতে ১২০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির টাকাসহ ১ জন গ্রেপ্তার জকিগঞ্জে কাজের ফাঁকে স্কুল পরিদর্শন করলেন ইউএনও: নিয়েছেন ক্লাসও! জকিগঞ্জে পুলিশের অভিযানে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার জকিগঞ্জে বাজার মনিটরিংয়ে বিশ হাজার টাকা জরিমানা জকিগঞ্জে দিনব্যাপী সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিলেন জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ জকিগঞ্জে ছাত্র মজলিসের সহযোগী সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নীরবে-নিভৃতে চলে গেলেন হারিছ চৌধুরী

রহমত আলী হেলালী
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২২
  • ২৩০৭ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

জীবনের ১৪টি বছর আত্মগোপনে থেকে নীরবে নিভৃতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন এক সময়ের দাপুটে ও আলোচিত রাজনীতিবিদ হারিছ চৌধুরী।
গত বছরের ০৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা ব্যারিষ্টার সামীরা তানজীন চৌধুরী (মুন্নু)। (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তাকে ঢাকার কাছে একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। কিছু কাছের স্বজন এবং ওলামা-মাশায়েখ অনেকটা গোপনে অনুষ্ঠিত এ জানাজায় শরিক হন।
বেশ কিছুদিন ধরে হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুবরণের কথা ইঙ্গিত করলেও সরাসরি কিছু বলেননি। তখন থেকে বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, হারিছ চৌধুরী লন্ডনে ইন্তেকাল করেছেন। ফলে কয়েকদিন ধরে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়।
হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিষ্টার সামীরা তানজীন চৌধুরী মুন্নু বিষয়টি খোলাসা করেন। তিনি জানান, তার বাবা ঢাকাতেই ইন্তেকাল করেছেন।
এর আগে, হারিছ চৌধুরীর অবস্থান নিয়ে ছিল নানা রকমের গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। কিন্তু সবার ধারণা ভুল প্রমাণিত করেছেন হারিছ চৌধুরী। স্বদেশেই থেকেছেন। তবে কখনো তাবলিগ-জামাতের হয়ে দ্বীনের দাওয়াতে আবার কখনো করেছেন মসজিদে ইমামতি।
সামীরা বলেন, ‘সিলেটের কানাইঘাটে পারিবারিক গোরস্থানে দাদুর কবরের পাশে বাবাকে সমাহিত করার কথা ছিল। কিন্তু আশিক চাচা (আশিক চৌধুরী) সাহস করলেন না। ’
হারিছ চৌধুরীর আত্মগোপনকালে তার পরিবারের সঙ্গে খুব সামান্যই যোগাযোগ হয়েছে উল্লেখ করে সামীরা বলেন, ‘বাবা চাইতেন, যা হয় তার ওপর দিয়ে যাক। সন্তান হিসেবে আমাদের, আত্নীয়-স্বজন এমনকি তিনি যে রাজনীতি করতেন সেই রাজনৈতিক নেতৃত্বও যাতে তার কারণে কোনো বিপদে না পড়ে সে জন্য কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখতেন না। মাঝে মধ্যে তিনি মোবাইলফোনে সবার খোঁজ নিতেন। সর্বশেষ তিনি যখন আমাকে কাছে চাইলেন, তখন সব শেষ। ’
সামীরা বলেন, ‘আমি কয়েক ঘণ্টার নোটিশে সব ছেড়ে দিয়ে গত ২৭ আগস্ট ঢাকা পৌঁছাই। ততোক্ষণে তিনি লাইফ সাপোর্টে চলে গিয়েছেন। করোনা থেকে নিউমোনিয়া হয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করে। বাঁচাতে পারলাম না বাবাকে। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে এক মুহূর্ত চোখের আড়াল করতে চাইনি। সব সময় তার পাশে বসেছিলাম। ভয় আর শঙ্কা আমাদের সব তছনছ করে দিল। মাত্র কয়েক দিন আগে ছোট চাচা (সেলিম চৌধুরী) স্ট্রোক করে মারা গেলেন। তার আগে মারা গেলেন হাসনাত চাচা (হারিছ চৌধুরীর ছোট ভাই), হারালাম এক ফুপু ও চার ফুপাকে। এমন বিপর্যয় আর কোনো পরিবারে হয়েছে কী না আমার জানা নাই।
হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে সামীরা বলেন, ‘এর সবটাই রাজনৈতিক। আমার বাবা হঠাৎ করে রাজনীতিতে আসেননি। ১৯৭৭ সাল থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছেন, সিলেট জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাকে যুবকদের সংগঠিত করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ছিলেন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব। তিনি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মতো রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। সব কিছুকে ছাপিয়ে আমার বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যিনি অস্ত্র হাতে দেশের জন্য লড়েছেন। তার সন্তান হিসেবে অবশ্যই আমি গৌরব বোধ করি। ’
তার বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে সামীরা বলেন, ‘এসব অভিযোগ কোন শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতার নামে আসেনি, বলেন! এগুলোর ভিত্তিও আমাদের কারও অজানা নয়। পারিবারিকভাবে চৌধুরী পরিবার অসচ্ছল নয়। জন্মের আগে থেকে ট্রলারের ব্যবসা আর ছোট বেলা থেকে আমাদের গাড়ির শো-রুম দেখে আসতেছি। ঢাকা এবং সিলেটে ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের পরিবার ঐতিহ্যমণ্ডিত। ক্ষমতায় থাকাকালীন গুলশানে একটি বাড়ি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রাজউক থেকে কিনেছিলেন যা সরকার পরবর্তীকালে বাতিল করে ফেরত নিয়েছে। আর কী এমন আছে! আমার দাদা সিও (সার্কেল) অফিসার ছিলেন, এমএলএ ইলেকশনও করেছেন। তার সব ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। আমার বাবা নটরডেম থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং লোক প্রশাসনে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। আমাদেরও সুশিক্ষিত করে গড়েছেন। আমি আইন পাশ করে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছি। আমার ছোট ভাই নায়েম চৌধুরী (জনি) লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকস থেকে মাস্টার্স করে সিনিয়র এনার্জি ট্রেডার হিসেবে জুরিখে কাজ করছে। ’
হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদ নিয়ে বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে তার মেয়ে সামীরা চৌধুরী মুন্নু বলেন, ‘আমি ২২ বছর থেকে দেশের বাইরে। পরপর দুই চাচা, ফুফু মারা গেলেন। এর বাইরে আমি তেমন কাউকে চিনি না। আশিক চাচাই বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সব করতেন বলে জানি। দাদার নামে বাবার প্রতিষ্ঠিত এতিমখানা, মাদরাসা সব তিনিই দেখাশোনা করেন। আমার ভাইয়ের মাধ্যমে সহায়তা দেই। আমরা আশিক চাচার কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। চাচাই মৃত্যু সংবাদটি প্রকাশের দায়িত্ব নিয়েছেন। ’
লন্ডনে মারা গিয়েছেন বলে আশিক চৌধুরীর মন্তব্য প্রসঙ্গে সামীরা বলেন, ‘হয়তো কোনো চাপে বা পরিস্থিতির কারণে তিনি এমনটা বলে থাকতে পারেন। যে কারণে তিনি বলেছিলেন সিলেটে দাফন করা নিরাপদ হবে না। আমার সঙ্গে এ বিষয়ে তার কোনো কথা হয়নি। আমার বাবার মতো একজন বিশাল ব্যক্তিত্বের মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হোক সেটা সন্তান হিসেবে আমার কাম্য হতে পারে না।উ

উল্লেখ্য যে, আবুল হারিছ চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার ৩নং দিঘিরপার ইউনিয়ন-এর অন্তর্গত দর্পনগর গ্রামে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
জকিগঞ্জ সংবাদ-এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
প্রতিষ্ঠাতা: রহমত আলী হেলালী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট