মানবতার সেবায় এক অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সিলেটের ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী ফাহিম আল্ চৌধুরী। রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের শাহবাগ এলাকার কচুয়া গ্রামের ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত খালেদ আহমদের পাঁশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি ধাঁপে ধাঁপে অসুস্থ খালেদ আহমদের চিকিৎসার জন্য মোট ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মানবিকতার জ্বলন্ত নজির স্থাপন করেছেন। জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের মহিদপুর গ্রামের (মসজিদ ওয়ালা) বাড়ির বাসিন্দা ফাহিম আল্ চৌধুরী প্রতিদিন-ই মানবতার ডাকে কারো না কারো পাঁশে গোপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর এই মানবসেবা শুধু জকিগঞ্জ কিংবা কানাইঘাটে নয়, পুরো দেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত পৌঁছে যাচ্ছে। তবে ব্যক্তি খালেদ আহমদের চিকিৎসার জন্য এককভাবে এত বিশাল অংকের টাকা প্রদানের মাধ্যমে তিনি মানবতার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন
করেছেন। রোববার রাতে সিলেট নগরীর খালেদ আহমদের বাসায় তাঁর পাঠানো সেই টাকা পৌছে দেন ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী এটিএম সেলিম চৌধুরী ও ট্রাস্টের সদস্য সচিব মৌলভী ছাইর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাব্বির আহমদ। অসুস্থ স্বামী ও তিন সন্তানসহ পাঁচ জনের পরিবারের একমাত্র ব্যক্তি খালেদ আহমদের স্ত্রী সালমা আক্তার এ টাকা গুলো পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
এ সময় তিনি বলেন- আবারও আমার অসহায় পরিবারের পাঁশে ফাহিম আল্ চৌধুরী ভাই দাঁড়িয়েছেন। আগেও ধাপে ধাপে তিনি ৯,০০,০০০/=(নয় লক্ষ) টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এখন আরও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আমার অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ফাহিম আল্ চৌধুরী ভাইকে নিয়ে বলার ভাষা আমার মাথায় আসছেনা। শুধু এটুকুই বলবো- আল্লাহ উনার এবং উনার পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য ও নেক হায়াত যেন দান করেন।
সালমা আক্তার এ সময় আরও জানান, আমি মেডিকেলে নার্সিং পেশায় চাকুরী করতাম। আমার স্বামীও একটি উন্নত মানের কাপড়ের দোকানে জব করতেন। আমাদের দু’জনের বেতনে পরিবারটা মুটামুটি ভালোই চলছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! ২০২৩ সালের শুরুর দিকে আমার স্বামীর ব্রেন টিউমার এবং পরবর্তীতে ব্রেন ক্যান্সার হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমাদের দু’জনের চাকুরী ছেড়ে দিতে হয়েছে। এরপর থেকে আমার স্বামীর চিকিৎসা বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা ফাহিম আল্ চৌধুরী ভাই সহ আমার স্বামীর এবং আমার বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনের সহযোগিতায় চলছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবারও আমার স্বামীর শারীরিক অবস্থা একেবারে বেহাল হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছি। প্রতি মাসে এখন আমাদের লক্ষ টাকা ব্যায় হলেও আয়-উপার্জনের কোন সুযোগ নেই। আমাদের পরিবারের সেই দূরাবস্থা দেখে মানবিক ফাহিম আল্ চৌধুরী আমাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। তাঁর মতো- এমন মানবিক মানুষ আমার জীবনে খুবই কম দেখেছি।
আমি মনে করি, ফাহিম ভাই প্রতিনিয়ত মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত কাউকে না কাউকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের জন্য যেটুকু করেছেন তা মানবতার অনুপম দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে আজীবন।
সালমা আক্তার নিজের পরিবারের বর্তমান দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে স্বামীর চিকিৎসা ও পরিবার চলার জন্য দেশী-প্রবাসী সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের সচিব শাব্বির আহমদ বলেন- মানবতা তখনই সবোর্ৎকৃষ্ট পর্যায় অবস্থান করে যখন তা পরিপূণর্ভাবে যথার্থ স্থানে প্রয়োগ করা যায়। অন্যথায় মানবতা কথাটির প্রকৃত কোনো অর্থ প্রকাশ পায় না। সবার অন্তরে যেমন মানবতা বিরাজমান থাকে না তেমনই সব ক্ষেত্রে মানবতার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো ঠিক নয়। মানুষ থেকে মানবতার সৃষ্টি আবার মানুষ দ্বারাই সেই মানবতার ধ্বংস করা হয়। চলমান সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানবতার দোহাই দিয়ে চলে হাজারো নৈতিকতাবিরোধী কমর্কান্ড। মানবতা শব্দের সঙ্গে গভীরভাবে যে শব্দটি জড়িয়ে আছে তা হচ্ছে নিঃস্বার্থ। কারণ কোনো ব্যক্তি যখন মানুষের কল্যাণে কাজ করে তখন তা থাকে সম্পূর্ণ স্বাথের্র বাইরে। আর এই নিঃস্বার্থভাবে নীরবে মানবতার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মানবিক ব্যক্তিত্ব ফাহিম আল্ চৌধুরী। তিনি শুধু অসুস্থ খালেদ ভাইকে নয়, প্রতিদিন দেশে-বিদেশে কিংবা নিজ এলাকায় কোথাও না কোথাও নিঃস্বার্থভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কখনো এসব মানবিক কাজে তিনি প্রচার-প্রচারণার চিন্তা করেননি। বছরখানেক পূর্বে ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্ট গঠন করা হলে আমরা কিছু কিছু বিষয় ট্রাস্টের পেইজে তুলে ধরি। নতুবা তাও প্রকাশ হতো না।
এ বিষয়ে ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান এটিএম সেলিম চৌধুরী বলেন- ফাহিম আল্ চৌধুরী আমার ছোট ভাই। সে মানবতার কল্যাণে কাজ করাকে ইবাদতের অংশ মনে করে। এই ইবাদতে সামিল হতে পেরে আমিও নিজেকে ধন্য মনে করছি। শুধু খালেদ নয়, সব সংকটময় সময়ে মানবসেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ফাহিম আল্ চৌধুরী। সে কখনো ক্ষমতা বা নেতা হওয়ার জন্য নয়, সে হতে চায় মানুষের প্রকৃত সেবক বা বন্ধু। তাঁর বেশীর ভাগ মানবিক কাজ গোপন থাকে। তবে সম্প্রতি আমরা ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের মাধ্যমে যে সকল কাজ করি তা কিছুটা আমাদের ফেসবুক পেইজে দিয়ে থাকি। তবে আমরা সব মানবিক কাজ প্রচারে মিডিয়া বিমূখ।
Leave a Reply