আগামী রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও জকিগঞ্জ-কানাইঘাটবাসীর প্রিয়মূখ বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরী’র দেহাবশেষ আসছে কানাইঘাটে।পুনর্দাফন করা হবে কানাইঘাট উপজেলার ৩নং দিঘীরপার পূর্ব ইউনিয়নের সড়কের বাজারের পশ্চিমে অবস্থিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গণে।
জানা যায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে এয়ার এম্বুলেন্সে করে দেহাবশেষ সিলেটে নেয়া হবে। সিলেটের শাহী ঈদগাহ ময়দানে বাদ জোহর জানাজা ও দোয়া মাহফিলের জন্য এম্বুলেন্সটি অবস্থান করবে। এরপর এম্বুলেন্সটি দেহাবশেষ নিয়ে কানাইঘাটের সড়কের বাজার যাবে। মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদায় ‘গার্ড অব অনার’ দিয়ে মরহুমের স্থাপিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গণে নির্ধারিত স্থানে দেহাবশেষ দাফন করা হবে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর রাজধানীর পান্থপথে মারা যান হারিছ চৌধুরী। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। পুলিশ খুঁজছিল তাকে। এরপর দৈনিক মানবজমিনসহ বিভিন্ন পত্রিকা প্রকাশ করে তার মৃত্যুর বিষয়টি।
প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর মেয়ে বিলেত প্রবাসী ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন। এরপর এনিয়ে চরম বিতর্ক দেখা দেয়। অনেকেই বলতে থাকেন এটা বানানো গল্প। সিআইডি বিষয়টিকে উড়িয়ে দেয়। তারা বলেন, অযথাই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। স্বৈরাচারী আমলে তদন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। গত ৫ই আগস্টের ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে। সামিরা চৌধুরী আদালতে যান। এরপর ডিএনএ টেস্টের আবেদন করেন।
ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ের বিচার শাখা থেকে ৮ই অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে সাভার মডেল থানাধীন জামিনে খাতামুন নবীঈনের জামিয়া খাতামুন কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলনের সময় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রাসেল ইসলাম নূরকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল দায়িত্ব পালনের কথাও বলা হয়। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং-১০৭৮৭/২৪-এ হারিছ চৌধুরীর মৃতদেহ উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য আদালত আদেশ প্রদান করেন। তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন এই মর্মে যে, তার পিতা হারিছ চৌধুরীকে জামিনে খাতামুন নবীঈনের জামিয়া খাতামুন কবরস্থানে মাহামুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়। হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ কবর থেকে উত্তোলন করে তার পরিচয় প্রমাণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করানো, পরিচয়ের ইতিবাচক ফলাফল, মৃত্যু সনদ পাওয়া, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ থেকে তার নাম মুছে ফেলা এবং তাকে নিজ জেলায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে দাফন করার আবেদন করেন।
গত ৫ই সেপ্টেম্বর বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর লাশ কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মাহবুবুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষা করে দাফন করা লাশটি হারিছ চৌধুরীর বলে উচ্চ আদালতকে জানায় পুলিশ।
সূত্র: দৈনিক মানবজমিন
Leave a Reply