জকিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ নজরুল ইসলাম (৩৮) সিলেট থেকে মামুন এন্টারপ্রাইজে ব্যবসায়িক মালামাল ক্রয় করতে ঢাকা যাওয়ার পথে অজ্ঞান করে নগদ ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ও ১৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি সামসাং মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় সিলেট দক্ষিণ সুরমা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জকিগঞ্জ উপজেলার ৭নং বারঠাকুরী ইউনিয়ন-এর বারঠাকুরী গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলাম।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারে ব্যবসা করার জন্য নজরুল এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ট্রেশনারী দোকান সাজগোজ করে রেখে ঢাকা শহর থেকে পছন্দমত মালামাল খরিদ করার জন্য গত ২৪ মার্চ রাতে রওয়ানা হন তিনি। এ সময় তাঁর নিকট নগদ ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ও একটি সামসাং মোবাইল ছিল। তাঁর পরণের পায়জামার ডান ও বাম পকেটে ২ লক্ষ টাকা করে মোট ৪ লক্ষ টাকা ও তাঁর সাথে থাকা হ্যান্ডব্যাগে ৭৪ হাজার টাকা এবং মানিব্যাগে ১ হাজার ২০০ টাকা ছিল। একই সাথে তার ব্যবহৃত সামসাং মোবাইল ছিল।
বৃহস্পতিবার (২৪শে মার্চ) দিবাগত রাত ১২ টা ৩০ মিনিটের সময় নির্মানাধীন সিলেট বাস টার্মিনালে গিয়ে পৌঁছে রাত ১ ঘটিকার দিকে মামুন এন্টারপ্রাইজ বাস কাউন্টার থেকে রেজিঃ নং- ৮৭৩৭ বাস গাড়ীর FI সীট তিনি বুকিং করলে কিছুক্ষণ পর জনৈক ব্যক্তি F2 সিট বুকিং করেন। ওইদিন রাত আআনুমানিক ১ টা ৩০ মিনিটের সময় সকল যাত্রীদেরকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে গাড়ীটি রওয়ানা হলে তিনি তার নির্ধারিত সীটে বসেন এবং জনৈক ব্যক্তি F2 সাঁটের যাত্রী তার সিটে বসে। সীটে বসার কিছুক্ষণ পর F2 সীটের জনৈক ব্যক্তি তার পকেট থেকে টিস্যু বের করে তার মুখের সামনের দিকে দুইবার ধরে। এরপর তিনি আর কোনকিছু বুঝে উঠিতে পারেননি। ২৬শে মার্চ শনিবার দুপুর অনুমান ১২ ঘটিকার সময় তার জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে একটি হাসপাতালের ব্যাডে দেখতে পান এবং তার পাশে তার ভাই কামরুল ইসলাম, সমছুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামকে দেখতে পান । এ সময় তিনি তার ভাইদেরকে তিনি কোন হাসপাতাসে আছেন এবং কেন আছেন জানতে চাইলে তারা তাকে ঢাকা মুগদা মেডিকেল কলেজ আছেন জানিয়ে বলেন, সায়দাবাদ ফুটপাত থেকে স্থানীয় লোকজন গত ২৫শে মার্চ শুক্রবার সকাল অনুমান ৮ ঘটিকার সময় ০১৭৩৫-২৫৪৪৭৮ নাম্বার মোবাইল ফোন থেকে তাদের পরিবারের মোবাইল ০১৭৮৮-২৪০৪৫০ নাম্বারে ফোন করে তিনি অজ্ঞান অবস্থায় সায়দাবাদ ফুটপাতে আছেন বলে জানান । তার ভাইয়েরা ঢাকাতে থাকা তাদের ভাই কামরুল ইসলামকে জানালে কামরুল ইসলাম এসে অন্যান্য লোকজনের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান বলে জানান ।
তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, তার সীটের ডান পাশের F2 সীটের অজ্ঞাতনামা যাত্রী তার পাশের সীটে বসে টিস্যু রুমাল নাকের সামনে ধরে যে কোন ধরনের চেতনা নাশক ঔষধ প্রয়োগ করে তাকে অজ্ঞান করে তার সাথে থাকা ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
তিনি তার পাশের সীটের অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ভুক্তভোগী মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, আমি দক্ষিণ সুরমা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এখনো মামলা রেকর্ড হয়নি। আমি দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দক্ষিণ সুরমা থানার ফাঁড়ি ইনচার্জ সোহেল রানা অভিযোগপ্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তদন্ত কাজ চলছে। আমরা ঢাকা থেকে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার ও হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনো অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি।
Leave a Reply