সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলায় গত দুইমাস থেকে ব্যাপক হারে চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৩১ জানুয়ারী) ভোররাতে জকিগঞ্জ উপজেলার ৪নং খলাছড়া ইউনিয়নের লামারগ্রাম ও আমবাড়ি গ্রামে পৃথক দু’টি বাড়িতে ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে। ডাকাতদল দু’টি পরিবারের ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে ২ জনকে মারাত্মক আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে জকিগঞ্জ উপজেলার ৪নং খলাছড়া ইউনিয়নের লামারগ্রামের আল্লামা আব্দুল জব্বার রায়পুরী (রহ.) পূরান বাড়িতে ৭-৮ জনের ডাকাত দল বাহিরে কেসিগেইটের তালা কেটে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। এ সময় হাফিজ মোঃ ইয়াহইয়া নামে পরিবারের এক সদস্য প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করলে হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। ডাকাতদল ঘরে ঢুকে ৪-৫ ভরি স্বর্ণ ও আনুমানিক নগদ ৯০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে চলে যায় বলে পরিবারের লোকজন জানান।
এর ঘন্টাখানেক আগে রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী আমবাড়ি গ্রামের নাজিম আহমদের ঘরে ঢুকে ডাকাত দল। তারা অস্ত্রের মুখে গৃহকর্তাকে জিম্মি করে হাত-পা বাঁধতে গেলে তিনি চিৎকার দিতে চাইলে ডাকাতরা তার মাথায় চাপাতি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এরপর ডাকাতরা জমি কেনার জন্য তাদের ঘরে রাখা নগদ ৪ লক্ষ ১১ হাজার টকাসহ ৩টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। তবে যাওয়ার সময় ডাকাতদল একটি মুটোফোন ওই বাড়িতে ফেলে যায় বলে বাড়ির বাসিন্দা কবির আহমদ জানান।
লামারগ্রামের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাড়ির বাসিন্দা ডা. হাবিবুল্লাহ মিছবাহ বলেন, আমি ঘটনার পরপর গুরুতর আহত আমার ভাগনা হাফিজ ইয়াহইয়াকে নিয়ে সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে এসেছি। তার অবস্থা খুবই মারাত্মক। আজ তাকে অপারেশন করার কথা। জকিগঞ্জ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রোগীর চিকিৎসা শেষে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে আমবাড়ি গ্রামের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাড়ির বাসিন্দা কবির আহমদ বলেন, আমার ছোট ভাই নাজিমের অবস্থা খুবই গুরুতর। সে এখন সিলেট এম.জি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের রয়েছেন। ঘটনার পর আমাদের বাড়িতে পুলিশ একাধিকবার এসেছে। আমাদের রোগী অবস্থা বুঝে মামলার সিদ্ধান্ত নেব।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাবেদ মাসুদ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছে। আমরা সরেজমিন গিয়ে ঘটনার বর্ণনা ও আলামত উদ্ধারের পাঁশাপশি তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। লামারগ্রামে ঘটনাটি ডাকাতি নিশ্চিত হওয়া গেলেও আমবাড়ি গ্রামে ডাকাতি না বিরোধ সংক্রান্ত বিষয় তা নিয়ে কাজ করছি। এখনো এ বিষয়ে তেমন কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
Leave a Reply