জকিগঞ্জের আটগ্রাম বাসষ্টেশনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক কলেজ ছাত্রী নিহতের ঘটনায় বাস চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, বাসের চালক দুলাল ও হেলপার সাবু। জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোশাররফ হোসেন তাদের দু’জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ভোরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন শাহপরাণ (রহ.) থানা এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতক বাস চালক দুলাল (২৮) আটক করা হয়। আটক বাস চালক দুলাল জকিগঞ্জ উপজেলার ৭নং বারঠাকুরী ইউনিয়নের অন্তর্গত সোনাসার এলাকার মৃত মকরম আলীর ছেলে।
অপরদিকে বাস দূর্ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জকিগঞ্জের সোনাসার এলাকা থেকে বাসের হেলপার সামছুদ্দিন উরফে সাবু মিয়াকে আটক করেছিল পুলিশ। বাস হেল্পার সাবু মিয়া জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত কলাকুটা এলাকার শাহজালালপুর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বেলা ২ টার দিকে জকিগঞ্জ উপজেলার লুৎফুর রহমান হাইস্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ফাতেমা বেগম ও একই শ্রেণীর ছাত্রী কাজী সাদিকা আক্তার বাড়ি ফেরার পথে আটগ্রাম বাসস্টেশনের পাঁশে একটি দোকানের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় লাইনচ্যুত হয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস ওই দু’জন ছাত্রীকে চাঁপা দেয়। এ সময় বাসের চাঁকায় পৃষ্ট হয়ে ফাতেমা বেগম ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং কাজী ছাদিকা আক্তার গুরুতর আহত হয়। মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে প্রায় ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে এবং কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে এ ঘটনায় ঘাতক বাসের চালক ও হেলপারকে অভিযুক্ত করে জকিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন কলেজের অধ্যক্ষ ছালিক আহমদ চৌধুরী। জকিগঞ্জ থানার মামলা নং ২০, তারিখ: ৩১/০৮/২০২২ খ্রিস্টাব্দ।
এরপর থেকে সর্বমহল থেকে দাবী উঠে ঘাতক বাস চালক ও হেলপারকে দ্রুত গ্রেপ্তারের। একই দাবীতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন বৃহস্পতিবার। পুলিশ বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করে দ্রুত বাস চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এদিকে বাস চালক ও হেলপারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ করায় লুৎফুর রহমান হাইস্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র-ছত্রী, শিক্ষক-কর্মচারী, গভর্ণিং বডির সদস্যবৃন্দ ও আটগ্রাম এলাকাবাসী সহ দেশের সকল ছাত্র ছত্রী ও অভিভাবকগনের পক্ষ থেকে জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোশাররফ হোসেন সহ জকিগঞ্জ থানার সকল পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান কলেজের অধ্যক্ষ ছালিক আহমদ চৌধুরী।
অপরদিকে ৩নং কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, ঘটনার দিন সড়ক অবরোধ তুলতে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর নিকট আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল চালক ও হেলপারকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘাতক বাস চালক ও হেলপারকে আটক করায় জকিগঞ্জ সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাকির হোসাইন ও জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোশাররফ হোসেনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
Leave a Reply