১২ই রবিউল আউয়াল। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক ও শেষ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন এবং এটাই তার ওফাত দিবস। এই দিনটি ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য দিনটি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং মানবতার কল্যাণে তার শিক্ষা ও আদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি সুযোগ। তার জীবনাদর্শ ইসলামের অনুসারীদেরকে সত্য, ন্যায়, এবং সহানুভূতির পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে।
১২ই রবিউল আউয়ালের বার্তা আমাদের শান্তি ও ঐক্যের পথ দেখায়। এই দিন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্প্রীতি ছড়িয়ে দেওয়া ধর্মের অন্যতম লক্ষ্য। হযরত মুহাম্মদ (সা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক সমতার পক্ষে কাজ করেছেন।
এবারে আমরা যখন ১২ই রবিউল আউয়াল বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্ন নামে পালন করছি, ঠিক তখন ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে ফিলিস্তিন। এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বে মৌখিক প্রতিবাদ ছাড়া তেমন কোনো কার্যকর প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই মনে করেন, বাইরের শত্রু নয়, নিজেদের মধ্যে অনৈক্য, স্বার্থপরতা ও সঙ্কীর্ণতাই মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে।
বিশ্বের অনেক স্থানেই শান্তি ও সহনশীলতার ধর্ম ইসলামের মূল শিক্ষা ভুলে গিয়ে কিছু ধর্মান্ধগোষ্ঠী অতি বাড়াবাড়ি করছেন। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময় কতিপয় ধর্মান্ধগোষ্ঠী ইসলামের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালাতে মাঝে মধ্যে দেখা যায়।
১২ই রবিউল আউয়ালের এই শুভদিনে আমরা শুধু মহানবীর (সা.) নির্দেশকেই স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। বিদায় হজের দিনে তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন: “তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না, অতীতে বহু জাতি এজন্য ধ্বংস হয়েছে।”
আমাদের জিজ্ঞাসা এই হওয়া উচিত যে, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার এই নির্দেশ কি আমরা মেনে চলছি।
১২ই রবিউল আউয়াল তখনই সার্থক হবে যখন মহনবীর (সা.) আদর্শকে ধারণ করে, তার নির্দেশ পালন করে মুসলিম সম্প্রদায় একটি ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে। আজকের বাংলাদেশে এটা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।
Leave a Reply