জকিগঞ্জের কৃতি সন্তান বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও ইসলামী চিন্তাবীদ হাফিজ মাওলানা মুফতি মোঃ আবুল হাসান রাগীব-রাবেয়া একুশে সম্মাননা পেয়েছেন।
শনিবার (১১ মার্চ) সকালে সিলেট লিডিং ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে দানবীর রাগীব আলী’র উপস্থিতিতে এ সম্মাননা হাতে তুলে দেয়া হয়।
সিলেটের মানব কল্যাণমূলক সংস্থা ‘রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশন’ তাকে ইসলামী চিন্তাবীদ হিসেবে এ সম্মাননা প্রদান করে।
অনুষ্ঠানে হাফিজ মাওলানা মুফতি আবুল হাসানকে ধর্মের প্রচার-প্রসার ও দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারের পাঁশাপাঁশি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কার্যক্রমে অসামান্য অবদানের জন্য সম্মাননা স্মারক, সনদপত্র, পুরস্কারের চেক, ব্যাগ সহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
জানা যায়, হাফিজ মাওলানা মুফতি মোঃ আবুল হাসান ১৯৬৬ সালের ১৫ই অক্টোবর জকিগঞ্জ উপজেলার ২নং বীরশ্রী ইউনিয়ন-এর মাঝরগ্রামে মরহুম মোঃ আব্দুল লতিফ ও মোছাঃ আছারুন বিবি’র ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন।
মুফতি মোহাম্মদ আবুল হাসান ১৯৮১ সালে হিফজুল কুরআন পরীক্ষায় আজাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লিম বাংলাদেশের অধীনে সম্মিলীত মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ছাফেলা (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় আজাদ দ্বীনি এবারায়ে তা’লিম এর অধীনে প্রথম বিভাগ লাভ করেন। ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আজাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লিম-এর অধীনে মুতাওয়াসসিতা (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ লাভ করেন। ১৯৯১ খ্রিষ্ঠাব্দে তিনি আজাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লিম এর অধীনে ফজীলত (ডিগ্রি সমমান) পরীক্ষায় প্রথম শেণিতে উত্তীর্ণ হন। আজাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লিম-এর অধীনে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান লাভ করেন। তিনি ১৯৯২-১৯৯৩ শিক্ষাবর্ষে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম থেকে ফতোয়া ও ইসলামি গবেষণা বিভাগে প্রথম শ্রেণী লাভ করেন।
১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে জামেয়া ইসলামিয়া লামারগ্রাম, জকিগঞ্জ, সিলেটে মুফতি ও মুহাদ্দিস পদে তিনি যোগদান করেন। পরবর্তীতে এই মাদ্রাসার ফতোয়া ও ইসলামি গবেষণা বিভাগের প্রধান পদে উন্নীত হয়ে অদ্যাবধি সুনামের সহিত কর্মরত আছেন। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে খতিব হিসাবে যোগদান করত অদ্যাবধি কর্মরত আছেন।
সামাজিক, ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডেও তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি (ক) বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড) এর মজলিসে শূরা ও আমেলার সদস্য এবং সিলেট জেলা বেফাকের সেক্রেটারি। (খ) জকিগঞ্জ কওমী মাদ্রাসা ঐক্য পরিষদেরও তিনি সেক্রেটারি। (গ) জাতীয় ইমাম সমিতি, সিলেট জেলা শাখার অন্যতম সদস্য। (ঘ) জাতীয় ইমাম সমিতি, জকিগঞ্জ পৌরসভার শাখার সভাপতি। (ঙ) উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি জকিগঞ্জ, সিলেট-এর তিনি সদস্য। (চ) উপজেলা চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটি জকিগঞ্জ সিলেট-এর সদস্য। (ছ) উপজেলা সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি জকিগঞ্জ, সিলেট-এর সদস্য। (জ) উপজেলা গুজব প্রতিরোধ কমিটি জকিগঞ্জ, সিলেট-এর সদস্য। (ঝ) ইসলামি বক্তা বা স্কলার হিসেবে দেশ ও বিদেশে তিনি জনপ্রিয়, পরিচিত ও সমাদৃত। ইসলামি বক্তা হিসেবে ভারত ও সৌদি আরব অংশগ্রহণ করেছেন।
তাঁর অনেক গবেষণাধর্মী লেখা স্থানীয় দৈনিক, মাসিক, ম্যাগাজিন ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি পবিত্র হজব্রত পালন ও হজগাইড হিসেবে ৭ বার এবং ওমরা পালনে দুইবার পবিত্র মক্কা-মদিনা গমন করেন।
হাফিজ মাওলানা মুফতি মোঃ আবুল হাসানকে রাগীব-রাবেয়া একুশে সম্মাননা প্রদান করায় জকিগঞ্জ তথা সিলেটের বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
Leave a Reply