সিলেট নগরীর কুমারপাড়া মানিকপীর রোডে অবস্থিত উইমেন্স মডেল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াদুদ তাপাদার বলেছেন, মেধাবী ও স্বপ্নবাজ মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে এখন উইমেন্স মডেল কলেজ। হোস্টেল সুবিধাসহ সিলেটের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর এ মহিলা কলেজ ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে সফলতার চুড়ান্ত শিখরে। চলতি এস.এস.সি পরীক্ষায় ৭টি এ-প্লাসসহ শতভাগ ফলাফল অর্জনকারী এ প্রতিষ্ঠান ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তার লক্ষ্যপানে।
তিনি শনিবার (১৯ জুলাই) বিকাল ৩ ঘটিকার সময় জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনে জকিগঞ্জের মূলধারার প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে উইমেন্স মডেল কলেজের একযুগপুর্তি উপলক্ষে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী’র সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক এনামুল হক মুন্না’র পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় শিক্ষক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় তিনি বলেন, একযুগ পূর্বে মাত্র ৪৪ জন শিক্ষার্থী ও ১২ জন শিক্ষক দিয়ে শুরু হওয়া এ কলেজে বর্তমানে ৪১ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক ও ৬০০-এর অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডে একাধিকবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে কলেজটি। প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজ ও দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে।
আবাসিক সুবিধা ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, “মফস্বলের মেয়েদের কথা বিবেচনায় আমরা স্বল্প খরচে নিরাপদ বোর্ডিং সুবিধা চালু করেছি। প্রতিমাসে মাত্র ৮-১০ হাজার টাকায় থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন আবাসিক ম্যাডাম থাকেন, যিনি সার্বক্ষণিক তদারকি করেন।”
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের জন্য বাইরে যেতে হয় না। কলেজেই প্রতিদিন বিকেলে দুই ঘণ্টা করে নিয়মিত কোচিং করানো হয়। সেইসঙ্গে ফ্রি কোচিংয়ের ব্যবস্থাও চালু রয়েছে।
প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করে অধ্যক্ষ বলেন, “এই যুগে প্রযুক্তিনির্ভর না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। তাই আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করেছি। প্রতি মাসের শুরুতেই পুরো পাঠ পরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যায়। কোন দিন কোন বিষয়ে পাঠদান হবে, সেটাও আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়—ফলে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে অংশ নিতে পারে।”
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা যাচাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের স্বনামধন্য শিক্ষকদের দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়—যাতে জানা যায়, কোন বিষয়ে তাদের দক্ষতা বেশি এবং কোন বিষয়ে বেশি মনোযোগ প্রয়োজন।
সভায় অধ্যক্ষ জকিগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, জকিগঞ্জ আমাদের শিকড়। জকিগঞ্জ-ই হচ্ছে আমাদের আশা ভরসার জায়গা। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমাদের এই যাত্রা ১২ বছরে পা দিয়েছে। আজকের এ আয়োজন শুধু শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য নয়, বরং আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই আমাদের অর্জন ও অঙ্গীকার। আপনারা আমাদের কলেজে আসুন, পরিবেশ দেখুন, শিক্ষার মান যাচাই করুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন আপনার মেয়েকে কোথায় ভর্তি করাবেন।
শিক্ষক ফয়ছল আহমদের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সূচীত এ সভায় বক্তব্য রাখেন জহুরচান বিবি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সিনিয়র সাংবাদিক এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন, জকিগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক ও জকিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আলম প্রমূখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত পাল, সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ এখলাছুর রহমান, সহ সভাপতি রহমত আলী হেলালী, সহ সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম লস্কর, কোষাধ্যক্ষ আল হাছিব তাপাদার, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও পাঠাগার সম্পাদক এম. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ তরফদার, প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সম্পাদক কে এম মামুন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক রিপন আহমদ, সদস্য মোঃ ইউনুছ আলী, মাসুম আহমদ খাঁন ও আবু বকর মোঃ ফয়ছল প্রমূখ।
Leave a Reply