সিলেটের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও জকিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইছামতি দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ শায়খুল হাদিস আল্লামা হবিবুর রহমান (মুহাদ্দিস ছাহেব) ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্নালিল্লাহি .. রাজিউন)। গতকাল সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটের দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন-এর রারাইগ্রামের নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, শিক্ষক-ছাত্র, সহকর্মী-সহযোদ্ধা ও ভক্ত-শুভার্থী রেখে যান। উনার মৃত্যুতে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে শতশত মানুষ রারাই গ্রামের বাড়িতে ভীড় করছেন। শেষ বারের মত প্রিয় মুহাদ্দিস ছাহেবকে এক নজর দেখতে দুরদূরান্ত থেকে অসংখ্য আলেম-উলামা, ভক্ত, অনুসারী, মুরিদীন, শিক্ষার্থী ও শুভাকাংখীগণ ছুটে এসেছেন। ভক্ত-অনুসারীদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন সকল মতপথের আলেম ওলামা সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।
আজ মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ঘটিকার সময় জকিগঞ্জ উপজেলার থানাবাজার লতিফিয়া ফুরক্বানিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সবার কাছে ‘মুহাদ্দিস ছাহেব’ নামে খ্যাত শাইখুল হাদীস আল্লামা হবিবুর রহমান জকিগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন-এর রারাইগ্রামে ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এলাকার খ্যাতিমান আলিমে দীন মরহুম মাওলানা মুমতায আলী ও মাতা মরহুমা আমিনা খাতুন। ৭ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
তিনি ইছামতি দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিয়মতান্ত্রিকভাবে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর দীর্ঘ পরিশ্রম ও একান্ত প্রচেষ্টা ইছামতি মাদ্রাসা পূর্ব সিলেটের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। তাঁর একক প্রচেষ্টায় মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয়। আলিম, ফাজিল ও কামিল ক্লাসের সরকারি মঞ্জুরি এবং স্বীকৃতি আদায়ে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। অবসর গ্রহণের পর তিনি ইছামতি মাদ্রাসার প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি সৎপুর কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শায়খুল হাদিস ছিলেন।
দীর্ঘ অর্ধশতাব্দীরও অধিককাল ধরে ইলমে হাদীসের খিদমতে নিয়োজিত এ মনীষী অধ্যাপনার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে কুরআন-হাদীসের শিক্ষা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন মাহফিলে বয়ান পেশ করতেন।
Leave a Reply