সিলেটে বিভাগীয় পর্যায়ে সফল জননী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছেন জকিগঞ্জ উপজেলার গণিপুর গ্রামের রহিমুন্নেছা চৌধুরী। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সফল এই নারীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও অর্থ সম্মানী তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন।
সফল জননী হিসেবে বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা রহিমুন্নেছা চৌধুরীর খুবই অল্প বয়সে একই গ্রামের দিদার বক্ত চৌধুরীর সাথে বিয়ে হয়েছিল। সংসার জীবনে তিনি ৭ ছেলে ও এক মেয়ের জননী। সন্তানদের পড়ালেখার ব্যাপারে সবসময়ই উদাসীন ছিলেন স্বামী দিদার বক্ত চৌধুরী। তবে নিজে পড়ালেখা না করতে পারার একটি দুঃখ মনের ভেতর পুষতেন রহিমুন্নেছা। সন্তানদের শিক্ষিত করে সেই দুঃখ ঘুচানোর প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। সেই প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নে অনেক প্রতিবন্ধকতা পাড়ি দিতে হয়েছে তাঁকে। শেষ পর্যন্ত সকল সন্তানকেই তিনি শিক্ষিত করতে সক্ষম হয়েছেন। শ্রেষ্ঠ জয়িতা রহিমুন্নেছার সকল ছেলে-মেয়ে বর্তমানে দেশ-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত।
জানা যায়, এ রত্নগর্ভা এই গর্বিত মায়ের সন্তান রিমন আহমদ চৌধুরী এবারের ইউনিয়ন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করেন। একজন উচ্চ শিক্ষিত, নম্র ও ভদ্র সাবেক ছাত্রনেতা হিসাবে রিমন আহমদ চৌধুরী এলাকায় বেশ পরিচিত। এছাড়া সেলিম আহমদ চৌধুরী সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, খালেদ আহমদ চৌধুরী সোনালী ব্যাংকের অফিসার পদে কর্মরত, হুমন আহমদ চৌধুরী সিলেট দক্ষিণ সুরমায় অবস্থিত সৈয়দ কুতুব জালাল হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন, শামিম আহমদ চৌধুরী ডেপুটি ম্যানেজার ডাচ বাংলা ব্যাংক, দবির আহমদ চৌধুরী লন্ডন প্রবাসি, কার্জন আহমদ চৌধুরী সিনিয়র অফিসার বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও মেয়ে ফরিদা ইয়াসমিন চৌধুরী গণিপুর কামালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আছেন।
সফল জননী রহিমুন্নেছা চৌধুরী জীবনের পড়ন্ত বেলায় সন্তানদের সুখি-সমৃদ্ধ জীবন দেখে আত্মপ্রশান্তি উপভোগ করেন। তাই সবার প্রতি তাঁর একটাই অনুরোধ, যতোই প্রতিবন্ধকতা আসুক সবকিছু পেছনে ঠেলে সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে মানুষ করার।
অপরদিকে মায়ের এই অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন সকল ছেলে-মেয়েরা।
Leave a Reply