সিলেটের জকিগঞ্জে শিহাব উদ্দিন সাবু (৫৫) নামের এক ব্যক্তি ভেবে লাশ দাফনের আগেই জানা গেল তিনি জীবিত আছেন।
এ ঘটনা রোববার (২২ জুন) সকালে জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতানপুর ইউপি ব্রাম্মণগ্রাম (এতিছানগর) গ্রামে ঘটে।
জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে জকিগঞ্জের বাবুরবাজার এলাকার বাবুল আহমদ হাসপাতালে এসে লাশ নিজের বড় ভাই সাবু মিয়া (৫৫) দাবী করে বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে নিয়ে লাশের দাফন কাফন ও কবর খোড়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে জানতে পারেন মৃত সাবু আহমদ জীবিত আছেন। এ ঘটনায় পুরো জকিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
লাশের ছোট ভাই পরিচয়দাতা বাবুল আহমদ জানান, তাঁর বড় ভাই সাবু মিয়া একজন মানসিক রোগী। গত এক সাপ্তাহ থেকে তাকে কোথাও খোঁজে পাচ্ছিলেন না। শনিবার রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে ছবি দেখে জানতে পারেন তার ভাইয়ের লাশ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে রয়েছে। পরে আত্মীয় স্বজন সহ তিনি হাসপাতালে এসে তার বড় ভাই ভেবে বাড়িতে নিয়ে দাফন কাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গভীর রাতে তাদের এক পরিচিতজন জানান তার ভাই সাবু আহমদ বেঁচে আছেন এবং স্থানীয় গঙ্গাজল বাজারে আছেন। পরে তিনি হাসপাতালে লাশটি ফেরত দিতে চাইলে যুব জামায়াত নেতা মিজানুর রহমানের অনুরোধে লাশ দাফন করেন।
জকিগঞ্জ পৌর জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সভাপতি মিজানুর রহমান জানান, আমরা গত দুইদিন পূর্বে অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই ব্যক্তিকে পা ভাঙা অবস্থায় পৌর এলাকার শেওলা রাস্তার মুখে পেয়ে মানবিক দিক বিবেচনায় হাসপাতালে ভর্তি করি। শনিবার রাতে ওই ব্যক্তি মারা গেলে আমরা সান’আ সানাবিল এর মাধ্যমে আনজুমানে মুফিদুল ইসলামের জিম্মায় অজ্ঞাত পরিচয়ে লা*শ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় লোকটির পরিবারের লোক পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি এসে লা*শ সনাক্ত করে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তারা জানান, লাশটি তাদের কেউ নন। পরে ওসি সাহেবের সাথে কথা বলে আমরা ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে লাশ দাফন করি।
জানাজার ইমাম জকিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা জালাল উদ্দিন জানান, রোববার সকাল ১১ ঘটিকায় স্থানীয় এতিছানগর জামে মসজিদে জানাজা শেষে বাবুর বাজার সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়। আমি ওসি সাহেবের সাথে কথা বলে মানবিক দিক চিন্তা করে জানাজা পড়াই এবং দাফনের জন্য বলি।
জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মোঃ আব্দুল আহাদ জানান, অজ্ঞাত পরিচয়ে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর আমরা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যখন লাশ সিলেটে প্রেরণ করবো। ঠিক তখনই লাশের ভাই ও আত্মীয় স্বজন পরিচয়ে লোকজন এসে লাশটি নিয়ে যান। এখন শুনছি ওই ব্যক্তি নাকি তাদের কেউ না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, আমরা জানতে পারি একজন অজ্ঞাত পরিচয়ের লোক চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছেন। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা করার আগেই ওই ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিকে জীবিত পাওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
Leave a Reply