জকিগঞ্জে শাহ সূফী হযরত আল্লামা শুয়াইবুর রহমান বালাউটি ছাহেব (রহ.)-এর বার্ষিক ঈসালে সাওয়াব মাহফিল রোববার (২৫শে ডিসেম্বর) বালাউট ছাহেব বাড়ি সংলগ্ন মাঠে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। প্রখ্যাত এ বুযুর্গের রুহানি দোয়া ও ফয়েজ প্রাপ্তির আশায় তাঁর মাজার প্রাঙ্গণে আল্লাহর দরবারে কয়েক হাজার ভক্ত মুরিদীন-মুহিব্বীন দফায় দফায় মোনাজাত করেন। এছাড়া তাঁর দরজা বুলন্দের কামনায় অশ্রুসিক্ত মোনাজাতে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মাহফিলকে কেন্দ্র করে পূর্বের দিন থেকে আসতে থাকেন অনেকেই। আল্লামা বালাউটি ছাহেব (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হওয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন হযরত মাওলানা মুফতি উবায়দুর রহমান ছাহেবজাদায়ে বালাউটি।
মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে নসিহত প্রদান করেন মুর্শিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী।
ছাহেব জাদায়ে বালাউটি মাওলানা ডা.শাহ মোহাম্মদ ছাফিউর রহমান, মাওলানা শাহ মিনহাজুর রহমান বালাউটি, মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মুনিবুর রহমান-এর যৌথ সঞ্চালনায়
সকাল ৮ টা থেকে খতমে কুরআন, খতমে বুখারী, খতমে দালাইলুল খাইরাত, খতমে খাজেগান ও মিলাদ-কিয়াম ধারাবাহিকভাবে শুরু হয়।
সকাল ১০ টায় খতমে খাজেগান, মিলাদ ও দুয়া’র মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেন মাওলানা শাহ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ছাহেব বালাউটি । দেশ ও বিদেশ থেকে আসা পীর-মাশায়িখ, উলামায়ে কেরামগণের ধারাবাহিক ওয়াজ নসিহত পরদিন ফজর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। সার্বিক শৃঙ্খলায় নিয়োজিত ছিলেন কয়েকশত স্বেচ্ছাসেবী।
অতিথির বয়ান করেন ভারতের উজানডিহী দরবারের মেজ ছাহেব হযরত মাওলানা সায়্যিদ খালেদ আহমদ মাদানী আল হুসাইনী, হযরত মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ছাহেব জাদায়ে ফুলতলী, ভারতের ফুরফুরা দরবারের হযরত মাওলানা সায়্যিদ আজমত হুসাইন পীর ছাহেব, আঞ্জুমানে আল ইসলাহ’র মহাসচিব মাওলানা এ কে এম মনোওর আলী ছাহেব,
ঢাকা মহানগর আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা মুফতি আবু নছর জিহাদী, ফান্দাউক দরবার শরীফের মুফতি মাওলানা সায়্যিদ আবু বকর আল হুসাইনি, মুফতি মাওলানা সায়্যিদ সালমান ফারসী আল হুসাইনি। মুফতি মাওলানা শাহ আলম জিহাদী, মুফতি মাওলানা মঞ্জুর হুসাইন খন্দকার কুমিল্লা, মুফতি মাওলানা এনামুল হক আজাদী মুবাল্লিগ জৈনপুর দরবার শরীফ ঢাকা, বুরাইয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, জকিগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসা’র সাবেক সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মুশাহিদ আহমদ কামালী, মিয়ারবাজার আলিম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল মুক্তাদির খান, ছিলাউড়া আলিম মাদরাসা’র আরবি প্রভাষক মাওলানা আবু আইয়ুব আনসারী, মাওলানা কাজী আব্দুর রহমান চান্দগ্রামী, মাওলানা কুতবুল আলম চান্দগ্রামী, মাওলানা আব্দুল আহাদ জিহাদী, মাওলানা মুজাম্মিল মাছুমী ও রতনগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তাগণ বলেন- শাহ সূফী আল্লামা বালাউটি ছাহেব রহ. সুন্নতে নববীর হুবুহু আদর্শে জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। তিনি বিলাসিতামুক্ত অত্যন্ত সাদা-মাটা ও অনাড়ম্বর জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আল্লাহর হাবীবের আদর্শের পূর্ণ অনুসারী ছিলেন। তিনি জানতেন, বিশ্বনবীর আদর্শিক শিক্ষা ব্যবস্থা হলো দ্বীন ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা। তাই বিশ্বনবীর আদর্শ বাদ দিয়ে অন্য কারো আদর্শ অনুসরণ করে জীবনে ও পরকালে সফল হওয়া যায় না। তিনি এ আদর্শিক শিক্ষা সমাজের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতে সমস্ত জীবন ব্যয় করেছেন।
মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ, ৩নং কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফুল আম্বিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান এম.এ.রশীদ বাহাদুর, কসকনকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক রিয়াজ, জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক রহমত আলী হেলালী, বালাউট দারুল কোরআন মাদরাসা’র পরিচালক মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বালাউটি, মাওলানা খলিলুর রহমান চৌধুরী ছাহেবজাদায়ে শিংগাইড়কুড়ি, চান্দগ্রাম ফাজিল মাদরাসা’র অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, মাওলানা মাশুকুর রহমান বালাউটি, মাওলানা মাহফুজুর রহমান বালাউটি,
হাফিজ মাওলানা মোহাম্মদ ওলিউর রহমান বালাউটি, মাওলানা মুছাদ্দিকুর রহমান বালাউটি, মাওলানা ইউনুস আহমদ মহব্বতপুরী, কামালপুর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী হাফিজিয়া মাদরাসা’র প্রধান শিক্ষক হাফিয আব্দুল গনী, মানিককোনা সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা’র সুপার মাওলানা আব্দুশ শাকুর, জালালপুর ফাযিল মাদরাসা’র সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আব্দুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক কবি শামছুল হক বিন আপ্তাব, মাওলানা নুরুল ইসলাম দরিয়াবাদী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদী, মাওলানা শফিকুর রহমান মনসুরপুরী,
মাওলানা কবি মাহবুবুর রহীম, মাওলানা আবুল কাশিম সিদ্দিকী, মাওলানা হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা , মাওলানা শফিকুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা মুছাদ্দিক হোসেন লতিফী, প্রমুখ।
মাহফিলে কুরআন তিলাওয়াত, হামদ-নাত, ইসলামী সংগীত ও মর্সিয়া পরিবেশন করেন বিভিন্ন শিল্পী গুষ্টীর সঙ্গীত শিল্পী গন।
Leave a Reply