জকিগঞ্জ উপজেলার ৭নং বারঠাকুরী ইউনিয়ন-এর অন্তর্গত বারঠাকুরী গ্রামের বাসিন্দা শায়খুল হাদীস মাওলানা আব্দুল হক আর নেই। বুধবার (৪ঠা মে) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের সময় সিলেট নগরীর নিজ বাসায় বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন।
তিনি ছিলেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের সাবেক খতীব আল্লামা উবায়দুল হক (রহ.) ছোট ভাই ও মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা-এর তাফসীর বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান।
জানা যায়, মাওলানা মো. আবদুল হক (রহ.) জকিগঞ্জের বারঠাকুরী গ্রামে ১৯৩০ খ্রীস্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা প্রখ্যাত আলিম হাফিয মাওলানা জহুরুল হক রাহিমাহুল্লাহ।
শিক্ষাজীবনে তিনি কাছাড় , ভাঙ্গাবাজার (বর্তমান ভারত) ও ময়মনসিংহের কয়েকটি মাদরাসায় অধ্যয়ন শেষে ১৯৪৯ খ্রীস্টাব্দে দারুল উলূম দেওবন্দ এ ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৫৩ খ্রীস্টাব্দে দাওরায়ে হাদীস এবং ১৯৫৫ খ্রীস্টাব্দে দাওরায়ে তাফসীর কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন। মাওলানা সায়্যিদ হুসাইন আহমাদ মাদানী, মাওলানা মাওলানা ইজাজ আলী, মাওলানা মুহাম্মাদ তায়্যিব ও মাওলানা ইবরাহীম বালিয়াবী (রহ.) তাঁর হাদীসের উস্তায ছিলেন।
কর্মজীবনে তিনি ১৯৬২ খ্রীস্টাব্দের জুলাই মাস পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জামেয়া ইমদাদিয়ায় শায়খুল হাদীস ও সহকারী নাজিমে তা’লীমাত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আপন শ্বশুর প্রখ্যাত আলিম ও রাজনীতিবিদ মাওলানা আতহার আলী (রহ.) নির্দেশে ময়মনসিংহের জামেয়া ইসলামিয়ায় শায়খুল হাদীস ও নাজিমে তা’লীমাত পদে যোগদান করেন। ১৯৭৭ খ্রীস্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর বড় ভাই খতীব আল্লামা উবায়দুল হক (রহ.) পরামর্শে মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা-এর তাফসীর বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি এবং তাফসীর বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ১৯৯৭ খ্রীস্টাব্দে সরকারী চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করেন । পরবর্তীতে তিনি কুলিয়ারচর জামেয়া ইসলামিয়ায় শায়খুল হাদীস হিসেবে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি সুত্রাপুর জামিউল কুরআন মাদরাসার মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস হিসেবে হাদীসে নববীর খিদমাত অব্যাহত রাখেন।
সংসার জীবনে তিনি তিন পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক। পুত্রগণ হলেন মাওলানা আশরাফুল হক, মাওলানা আনওয়ারুল হক ও মাওলানা সিরাজুল হক।
বড় জামাতা বহুগ্রন্থ প্রণেতা শায়খুল হাদীস মাওলানা শফিকুর রাহমান জালালাহাদী ও ছোট জামাতা হাফিয মাওলানা মনসুরুল হক।
Leave a Reply