জকিগঞ্জে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি আদায়ে কর্মবিরতির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার দাবি আদায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন। দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় ও শাহবাগে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার (৯ নভেম্বর) থেকে জকিগঞ্জ উপজেলার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন সহকারী শিক্ষকেরা। ফলে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, সহকারী শিক্ষক পদটি ১০ম গ্রেডে করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকেরা। তাঁদের অন্য দুটি দাবি হলো শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন-স্কেলের ১৩তম গ্রেডে বেতন পান। তা ১০ম গ্রেডে করার দাবিতে এখন আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকেরা। তাঁদের অন্য দুটি দাবি হলো শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া। কিছুদিন আগে তাঁরা সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম করার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। তবে সেখান থেকে এগিয়ে এখন ১০তম গ্রেডে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ উপজেলা সহকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের এই দাবি নতুন নয়। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেও এ নিয়ে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। ২০১৪, ২০১৭, ২০১৯ এবং সর্বশেষ ২৫ শে আগস্ট, ২০২৫ সালেও আমরা ঢাকায় সমাবেশসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ শুধু আশ্বাস দিয়ে আমাদের থামিয়ে রেখেছিলেন। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে প্রত্যাশা ছিল দাবিগুলো বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু অন্তবর্তী সরকারের এই দীর্ঘ সময়েও তা আলোর মুখ দেখেনি। বাধ্য হয়ে শিক্ষককরা যখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামলেন তখন পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং কাঁদানেগ্যাস ও গরম পানি নিক্ষেপসহ অসংখ্য শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ সকল সিস্টেম বিকল করে দেওয়ার জন্যই আজ আমাদের কর্মবিরতির মতো কঠিন কর্মসূচিতে যেতে হয়েছে। ”
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি জকিগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আব্দুস শহীদ তাপাদার বলেন, শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশী অত্যাচার মোটেই প্রত্যাশিত নয়। আমরা সহকারী শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে দৃঢ়ভাবে একাত্মতা ঘোষণা করছি।
জকিগঞ্জ উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল খালিক বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতি গড়ার কারিগর। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, শনিবার শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করলে পুলিশ কর্তৃক নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। প্রধান শিক্ষক সমিতি জকিগঞ্জ উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এরই সাথে যুক্তিসংগত দাবি মেনে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সহকারী শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন সম্পর্কে অবগত আছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আশা করছি একটা সমাধান বের হবে।
Leave a Reply