জকিগঞ্জের ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে জিয়ারত করতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বিশ্বনাথের বেতসান্দি গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক মোঃ খসরু মিয়া। আনুমানিক চল্লিশ বছর বয়সি এই যুবক সিলেটের কামালবাজারে অবস্থিত লিডিং ইউনিভার্সিটির একজন কর্মচারী ছিলেন।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে জিয়ারতে এসে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়ে যান। এরপর স্থানীয় এলাকাবাসী, ফায়ার সার্ভিস ও জেলেদের সহায়তায় দীর্ঘ ৬ ঘন্টা পর পানির নীচে তলিয়ে যাওয়া খসরু মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। অত্যন্ত হৃদয় বিদারক এ ঘটনায় পুরো সিলেট জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায়, বিশ্বনাথ উপজেলার ৩নং অলংকারী ইউনিয়নের বেতসান্দি গ্রামের খসরু মিয়া বেশ কয়েক বছর থেকে মানসিক রোগে ভূগছিলেন। ২০২১ সালে তাকে ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে নিয়ে আসলে কিছুটা সুস্থ হয়ে যান। গত মাসখানেক সময় থেকে তিনি পুনরায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে খসরু মিয়ার ইচ্ছা অনুযায়ী স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও বাগনা মিলে তাকে রোববার বিকেলে ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে নিয়ে আসেন। আসার পথে তারা হযরত শাহজালাল ও শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন।
পরিবারের লোকজন জানান, খসরু মিয়া ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে এসে গরম লেগেছে বলে পুকুরে গোসল করতে নামেন। গোসলের এক পর্যায় তিনি সাতার দিয়ে পুকুরের মধ্যখানে গিয়ে ডুবতে শুরু করেন। পুকুর ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা পরিবারের লোকজন বিষয়টি দেখে তাৎক্ষণিক পানিতে নেমে তাকে ধরতে চাইলে তিনি পানির নীচে তলিয়ে যান। এরপর থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন অনেক খোঁজাখুজি করে খসরু মিয়াকে উদ্ধার করতে পারেননি। দীর্ঘ ৬ ঘন্টা পর স্থানীয় একদল জেলে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের সহযোগিতায় পুকুরের জাল ফেলে খসরু মিয়ার লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি.ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান। পরিবারের লোকজন যাবতীয় আইনী প্রক্রিয়া শেষে সোমবার বাদ জোহর বিশ্বনাথের বেতসান্দি গ্রামে জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করেন।
Leave a Reply