প্রাথমিক ঘোষণা ছিল ১৪ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একমাস ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের সহযোগিতায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন-এর ফ্রি চক্ষুসেবা কর্যক্রম চলবে। কিন্তু অত্যন্ত ব্যায়বহুল এই মানবিক কার্যক্রম একমাস পেরিয়ে গেলেও এখনো থেমে নেই। এলাকার মানুষের দাবীর প্রেক্ষিতে মানবদরদী ফাহিম আল্ চৌধুরী’র নির্দেশনায় চলমান রয়েছে বিনামূল্যের এই চক্ষুসেবা কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কানাইঘাট উপজেলার ৩নং দিঘিরপার পূর্ব ইউনিয়নে দিনব্যাপী চলে চক্ষুসেবা কার্যক্রম। মানবিক এই চক্ষু ক্যাম্পে অতিতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে জড়ো হয়েছিলেন এলাকার হাজার হাজার গরীব-অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষ। বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন ৩নং দিঘিরপার পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন চৌধুরী মুহিন। তিনি বলেন- তাঁর ইউনিয়নের এই চক্ষু ক্যাম্পে জকিগঞ্জের কাজলসার ইউনিয়ন ও কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের একাংশ এবং সাতবাক ইউনিয়নের বৃহৎ অংশের লোকজন জড়ো হয়েছিলেন। অতিতের সকল চক্ষু সেবা ক্যাম্প থেকে দিঘিরপার পূর্ব ইউনিয়নের এই ক্যাম্পে লোক সমাগম বেশী হয়েছে বলেও তিনি জানান।
চক্ষুসেবা কার্যক্রম পরিদর্শনে আসা কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের একাধিক বারের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আশিক চৌধুরী জানান, ফাহিম আল্ চৌধুরী অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ। উনার আচার-আচরণ এবং কথা বার্তা মুগ্ধ হওয়ার মতো। তিনি জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের মানুষের কল্যাণে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে আসছেন। শুধু তিনি নন, উনার পুরো পরিবারটাই একটি মানবিক পরিবার। এ পরিবারের সাথে আমার বেশ কয়েক যুগের পরিচয়। আমি দীর্ঘদিন থেকে তাদের এসব মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রম দেখে আসছি।
আমি মনে করি, ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের সহযোগিতায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এই অঞ্চলে বিনামূল্যে চক্ষুসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে জকিগঞ্জ-কানাইঘাটবাসীর হৃদয়ের মণিকোটায় স্থান করে নিয়েছে। আমি মহৎ এ কার্যক্রমের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি।
জকিগঞ্জের শাহবাগ জামিয়া মাদানিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা ফারুক আহমদ বলেন, ফাহিম আল্ চৌধুরীর কাজ এসবে সীমাবদ্ধ নয়, তিনি জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের সামাজিক, মানবিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে আসছেন। উনার সহযোগিতা পুরো দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
জামেয়া দারুল আজহার দরগাবাহারপুর-এর পরিচালক মাওলানা আব্দুল হামিদ জালাল বলেন, ফাহিম আল্ চৌধুরীর মতো মানুষের জন্ম একবার-ই হয়। আমরা যদি এমন মানুষদের সময় মতো মূল্যায়ন ও সহযোগিতা করতে পারি, তাহলে এই অঞ্চলের বিপ্লব হবে এবং দিনদিন উন্নত হবে পুরো এলাকা। আমি নিজেকে ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের সকল ভালো কাজে আমৃত্যু উৎসর্গ করার প্রতিজ্ঞা করেছি।
এ বিষয়ে ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান এটিএম সেলিম চৌধুরী বলেন, ফাহিম আমার ছোট ভাই। সে সেই ছোট বেলা থেকেই মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিক কার্যক্রমের একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম হচ্ছে ‘ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্ট’। ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টকে বিশ্বাস করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এমন একটি বৃহৎ কর্মসূচি হাতে নেয়ায় আমাদের কার্যপরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইনশাআল্লাহ, আগামীতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের সহযোগিতায় আমরা আরও কিছু ব্যতিক্রমধর্মী ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার ইচ্ছা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ফাহিম আল্ চৌধুরী ট্রাস্টের সহযোগিতায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন-এর মাসব্যাপী চক্ষুসেবা কর্যক্রম শেষ হলেও স্থানীয় জনসাধারণের আবদারে উনার ছোট ভাই ফাহিম আল্ চৌধুরী আরও ৩টি চক্ষু ক্যাম্প করার জন্য বলেছেন। তন্মধ্যে দিঘিরপার ইউনিয়নে মঙ্গলবার হয়ে গেছে। এখানে প্রচুর রোগী উপস্থিত হলেও বিকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ লোককে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তন্মধ্যে ১ হাজার ১৫০ জনকে ঔষধ দেয়া হয়েছে। চশমা প্রদান করা হয়েছে ৪৪৭ জনকে এবং অপারেশনের জন্য ৫০ জনকে সিলেক্ট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি তাদের বাড়ি জকিগঞ্জ উপজেলার শাহবাগ মহিদপুর (মসজিদ ওয়ালা) বাড়িতে ও কানাইঘাট উপজেলার সুরইঘাট এলাকায় আরও দু’টি ফ্রি চক্ষুসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানিয়েছেন।
Leave a Reply