অনলাইন মেয়েদের কাপড় ও বোরকার ব্যবসা বিশ্বব্যাপী মহীরুহে পরিণত হলেও বাংলাদেশে চিত্রটা ভিন্ন। এজন্য এক শ্রেণীর প্রতারক দায়ী। ফেসবুকে পেইজ খুলে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মোবাইল বন্ধ রেখে টাকা আত্মসাৎ করে প্রতারণা করে যাচ্ছে হরহামেশা। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে সুন্দর সুন্দর কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরবর্তীতে মোবাইল বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা এখন অহরহ ঘটছে। আমাদের হাতে প্রতারিত হওয়ার একাধিক অভিযোগ এসেছে।
জানা যায়, অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা করছে Fashionable dresses নামের একটি ফেসবুক পেইজ। তাদের ফেসবুক পেইজে নারীদের ড্রেস ও বোরকা সহ হরেক রকম কাপড় রয়েছে। তারা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মেয়েদের দিয়ে ফটোশুট ও লাইভ করে থাকে এসব পেইজে।
ঠিক এই পেইজের মতোই Fashionable dresse নামে আরেকটি পেইজ রয়েছে ফেসবুকে। তারাও একইভাবে ফেসবুক পেইজে ড্রেস ও বোরকা বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে রেখেছে। পাশাপাশি নামের দু’টি ফেসবুক পেইজের কোনটিতেই মোবাইল নাম্বার দেয়া নেই। পছন্দসই ড্রেস বা বোরকা অর্ডার করতে তাদের পেইজের ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে হয়। আর ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগের পর অর্ডারকারীর নাম ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার নিয়ে কল দিয়ে কথা বলে অর্ডার কনফার্ম ও ড্রেস পৌছে দেয়ার কথা বলে সম্পূর্ণ মূল্য বিকাশ নাম্বারে অগ্রিম পাঠিয়ে দিতে বলে। গ্রামের সহজ সরল মেয়েরা ও নারীরা এমন প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে টাকা পাঠিয়ে দিলে তাদের যোগাযোগ নাম্বার ও বিকাশ নাম্বার বন্ধ করে দেয়া হয়।
সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সাজাপুর গ্রামের জনৈক প্রবাসীর স্ত্রী’র সাথে। তিনি জানান, উল্লেখিত দু’টি পেইজে একটি বোরকা দেখে তাদের ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করলে তারা ০১৭৮৮-৬৪০৯৫১ নাম্বার থেকে ফোন করে ওয়ার্ডার কনফার্ম করে ২ হাজার ৫০০ টাকা ০১৭৯৫-৪৭৮৮৯৩ নাম্বারে বিকাশ করতে বলে। তাদের কথা অনুযায়ী আড়াই হাজার টাকা তিনি ০১৭৯৫-৪৭৮৮৯৩ নাম্বারের বিকাশ একাউন্টে পাঠিয়ে দিলে তারা পণ্য না দিয়ে মোবাইল নাম্বার দু’টি বন্ধ করে দেয়। তাদের মোবাইল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উপায়ন্তর হয়ে তিনি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করলে তাও ব্লক করে দেয়া হয়। এমন অবাক করা কান্ডে তিনি এখন হতভম্ব। তার দাবী, এই দু’টি পেইজ যারা চালাচ্ছে তাদের মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে। দু’টি পেইজের ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করা হলে একই নাম্বার থেকে কল করা হয়। পরবর্তীতে একটি বিকাশ নাম্বার দেয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে তাদের যোগাযোগ করা মোবাইল ও বিকাশ নাম্বারে কথা বলতে চাইলে দু’টি নাম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ফেসবুক পেইজের ম্যাসেঞ্জারে এবং হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলার চেষ্টা করলে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীদের দাবী, এদের চিহ্নিত করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেন দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসেন। অন্যতায় প্রতিনিয়ত এভাবে অনেকেই প্রতারিত হতে থাকবে।
Leave a Reply