জকিগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বিভিন্ন স্থানে ডাইক ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। শনিবার (১৪ মে) বিগত ৩/৪ দিনের ভারী বৃষ্টির কারণে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ১.৪৫ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়নের উত্তর বাল্লা এলাকায় দু’টি স্থানে, ৩নং কাজলসার ইউনিয়নের আটগ্রাম বাজার সংলগ্ন চারিগ্রাম ও বড়বন্দ এলাকায় পৃথক দু’টি স্থানে এবং ১নং বারহাল ইউনিয়নের নোয়াগ্রাম, উত্তর খিলোগ্রাম, বারাকুলি চক, শরীফাবাদ ও কচুয়া এলাকায় ৫টি স্থানে মারাত্মক নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙ্গন ছাড়াও সুরমা নদীর ডাইকের উপর দিয়ে বিভিন্ন স্থানে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। সুরমা নদীতে এখনো হু হু করে পানি বাড়ছে। এতে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন এলাকাবাসী। পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। সুরমা নদীর স্রোতে বিভিন্ন এলাকায় আরও ডাইক ভাঙ্গার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। নদীর ডাইক ভাঙ্গনের ফলে যে কোন সময় জকিগঞ্জে বড় ধরণের বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এতে বাড়ি-ঘর ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যথা সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এমনটি হয়েছে। তাদের মতে, আগে থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ মজবুত করে দিয়ে রাখলে এখন আতঙ্কিত হওয়ার কিছু ছিলনা।
সুরমা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের খবর পেয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুস সবুর, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পল্লব হোম দাস, জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোশাররফ হোসেন, জকিগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হাজী খলিল উদ্দিন, ১নং বারহাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, ৩নং কাজলসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুলকারনাইন লস্কর ও ৯নং মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু জাফর মোহাম্মদ রায়হান।
সরেজমিন ঘুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ জনগণকে নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ডাইক মেরামত করতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি না থামলে সুরমা নদীর ডাইক দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে সুরমা নদীর তীরবর্তী বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তা-ঘাট ডুবে যাবে। ভেঙে যেতে পারে কাঁচা ঘরবাড়ি। তাই জরুরীভাবে সরকারি প্রদক্ষেপ নেয়া দরকার। অন্যতায় নদী তীরবর্তী মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃষ্টি থামলে এবং পানি কমে গেলে ভাঙ্গন মেরামত সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply