জকিগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ ও ষড়যন্ত্রের শিকার দাবী করে নিজের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন জকিগঞ্জ পৌর এলাকার নরসিংহপুর গ্রামের মাওলানা মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মামুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, আমার ভাই শামসুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী সন্তান সহ আমার অপর ভাই হাবিবুর রহমান চৌধুরী নিজেদের অন্যায় অপকর্ম ঢাকতে এবং আমাকে অপদস্থ-অপমানিত ও হেনস্থা করতে আমার বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা গত ১৭ ডিসেম্বর কথিত সংবাদ সম্মেলনের নামে কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ফেসবুক পেইজে সহ ১/২টি দৈনিক পত্রিকায় সম্পূর্ণ মিথ্যা, সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য প্রদান করে আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য নষ্ট করেছেন। আমাকে ওলামালীগ নেতা, থানার দালাল ও ভূমি আত্মসাৎকারীর মতো জঘন্যতম মিথ্যাচার করে তারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকার অপচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন।
লিখিত বক্তব্যে মামুনুর রশীদ চৌধুরী দাবী করেন, তিনি কোনদিনও আওয়ামী লীগ কিংবা ওলামালীগ সহ তাদের কোন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তিনি ছাত্র জীবন থেকে জমিয়তুত তুলাবা এবং পরবর্তীতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে অসুস্থতার কারণে তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কোন দায়িত্বে না থাকলেও নিজেকে একজন একনিষ্ঠ জমিয়ত কর্মী দাবী করেন। থানার দালালী প্রসঙ্গে বলেন, আমি আমার নিজের মামলা কিভাবে করতে হবে তা অনেককে জিজ্ঞাসা করে জেনেছি। থানায় গিয়ে কিভাবে পুলিশের সাথে কথা বলতে হয় তাও এখন পর্যন্ত জানিনা। অথচ আমাকে বলা হচ্ছে আমি নাকি থানার দালাল! তিনি এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা অপপ্রচার উল্লেখ করে বলেন, ভূমি আত্মসাৎ করেছি বলে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে এসবেরও নুন্যতম কোন সত্যতা নেই। কেউ নুন্যতম এক শতক জমি আত্মসাতের প্রমাণ দিতে পারলে তিনি যে কোন কঠিন শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত বলে সাংবাদিকদের জানান।
লিখিত বক্তব্যে মাওলানা মামুন আরও বলেন, তিনি ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবসার জন্য সিলেটে অবস্থান করেন। এ সময়ে তাঁর বাবা-মা সহ বাকি ভাই-বোন বাড়িতে থেকে বাড়ির যাবতীয় সহায় সম্পত্তি ভোগ দখল করেন। ২০০৪ সালে তাঁর বাবা ব্রেইন স্টোক করে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লে তাঁর ভাই শামসুল হক চৌধুরী বাবার কাছ থেকে জমি-জমা অবৈধ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে একটি সাদা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক দস্তখত নিতে চেয়েছিল। এহেন পরিস্থিতিতে তিনি ২০০৫ সালে বাবা-মায়ের চিকিৎসা ও নিরাপত্তার স্বার্থে সিলেট নিয়ে যান। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি এবং তাঁর বাবা-মা সিলেট অবস্থান করায় শামসুল হক চৌধুরী নিজের পৈত্রিক সমস্ত জমি-জমা বলতে গেলে একাই ভোগ করেন। ২০১৫ সালে মাওলানা মামুন অসুস্থ হয়ে বাড়িতে চলে এসে ভাই-বোনদের নিয়ে জমি-জমার কিছু অংশ মৌখিকভাবে বন্টন করে ভোগ দখল শুরু করলে শামসুল হকের স্বার্থে আঘাত লেগে যায়। এরপর শামসুল হক বাবার আমলের পূর্ব শত্রুদের সাথে আতাত করে মাওলানা মামুনকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে একেরপর এক ষড়যন্ত্র ও ঘটনা ঘটাতে শুরু করেন এবং একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ নভেম্বর তুচ্ছ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে মাওলানা মামুনের স্ত্রী ও সন্তানদের মারধর করে শামসুল হক ও তার স্ত্রী সন্তানরা। খবর পেয়ে মাওলানা মামুন বাড়িতে এসে স্ত্রী সন্তানদের হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে বাড়ি একা পেয়ে পরদিন তাদের ক্ষেতের ২৫ মন ধান নিয়ে যায় শামসুল হক ও তার স্ত্রী সন্তানরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশী তদন্তে মাওলানা মামুনুর রশীদ চৌধুরী’র অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তা রেকর্ড করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন শামসুল হক চৌধুরী গংরা। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে বানোয়াট কাহিনী সাজিয়ে সংবাদ সম্মেলনের নামে মামলার আসামীরা মাওলানা মামুনের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্যে এমনটাই জানান ভুক্তভোগী মাওলানা মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মামুনুর রশীদ চৌধুরী’র ছোট ভাই মাসুদ আহমদ চৌধুরী, চাচাতো ভাই আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ভাতিজা আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, এলাকার মুরব্বী খলিলুর রহমান ও নজরুল ইসলাম প্রমূখ।
Leave a Reply