জকিগঞ্জ উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের অবহেলায় দুই মাস বয়সী এক শিশু কন্যার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জকিগঞ্জ উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে এই ঘটনা ঘটে।
শিশুর পিতা জকিগঞ্জ উপজেলার ৭নং বারঠাকুরী ইউনিয়নের উত্তরভাগ গ্রামের খসরু মিয়া বলেন, তিনি নিজের দুই মাস বয়সি শিশু কন্যাকে মঙ্গলবার আসরের আযানের সময় জকিগঞ্জ উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাকে পার্শ্ববর্তী বিল্ডিংয়ে যেতে বলেন। পার্শ্ববর্তী বিল্ডিংয়ে গেলে ওরা পূনরায় জরুরি বিভাগে যেতে বলেন। এভাবে তিনি বেশ কয়েকবার আসা-যাওয়া করতে করতে তাঁর শিশু কন্যা মাগরীবের সময় মারা যায়। তখন চিকিৎসকরা তার মৃত শিশু কন্যাকে অক্সিজেন দিয়ে বলেন শিশুটি মারা গেছে।
শিশুটির মা বলেন, অনেক অপেক্ষার পর একটি কন্যা শিশু পেয়েছিলাম। শিশু অসুস্থ হওয়ায় নিজে খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে হাসপাতালে চলে আসি। অথচ এখানে চিকিৎসকদের অবহেলায় আমার কলিজার টুকরো শিশুটি মারা গেল।
শিশুটির নানি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বসার মতো একটুও জায়গা না দিয়ে বকাবকি করে সেখান থেকে সরিয়ে দেন ডাক্তাররা। আমাদের রেখে অনেক রোগী দেখলেও আমাদের শিশুটি দেখেনি ডাক্তার।
প্রত্যক্ষদর্শী জকিগঞ্জ পৌরসভার স্থানীয় সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর জোসনা খানম বলেন, জকিগঞ্জ উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আমার বোনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির পিতা-মাতাকে কাঁদতে দেখি। আমার তাড়াহুড়ো থাকায় সোজা চলে যাই বোনের নিকট। আধাঘন্টা পরে সেখান থেকে নীচে নেমে দেখি ওরা তখনো কাঁদছে। এ সময় আমি জিজ্ঞাসা করলে বিস্তারিত আমাকে জানায়। তখন আমি তাদের এই বক্তব্য ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেই। ওরা আমার কেউ নয়, ওদের আমি চিনিনা। মানবিক কারণে আমি এই ভিডিও করে ছেড়েছি।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. শেখ মোঃ আব্দুল আহাদ ও সেইদিন জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. তওফীক আলম সিদ্দীকি মোবাইল ফোনে আমাদের জানান, মূলত শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। বারবার ঘুরানোর যে অভিযোগ করা হয়েছে, সে বিষয়ে বলেন, ইমার্জেন্সি থেকে তাদের পার্শ্ববর্তী পঞ্চাশ শয্যার হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট পাঠানো হয়েছিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত দেখে মৃত্যু সার্টিফিকেটের জন্য পূনরায় ইমার্জেন্সিতে পাঠিয়েছেন।
Leave a Reply