জুলাই অভ্যুত্থানে গড়ে ওঠা বিপ্লবীদের নতুন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটি জকিগঞ্জ উপজেলা শাখার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫ টায় জকিগঞ্জ ডাক বাংলো প্রাঙ্গনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হুসেন আহমদের সভাপতিত্বে ও জেলা সদস্য নাদিম আহমদের পরিচালনায় সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন জেলা সদস্য ইমরান হোসেন।
মতবিনিময় সভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব পরবর্তী প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট জেলা নাগরিক কমিটির সার্চ কমিটির সদস্য আব্দুর রহিম বলেন -“আজ আমরা এমন এক সময়ে একত্রিত হয়েছি, যখন দীর্ঘ স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াই সফল হয়েছে। ৫ আগস্ট ২০২৪-এ আওয়ামী স্বৈরতন্ত্রের পতন ঘটেছে, তারা জনগণের রোষের মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু লড়াই এখানেই শেষ নয়-আমাদের সামনে নতুন রাষ্ট্র গঠনের চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। গত এক যুগ ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ওপর একের পর এক আঘাত এনেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিরোধী দল ও আন্দোলনকারীদের গুম, খুন ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দমন করা হয়েছে।রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া দমন করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধী রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক রায় দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির কারণে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট তৈরি হয়েছে, যার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়েছে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় আকাশচুম্বী হয়েছে।আমাদের আন্দোলন শুধু শেখ হাসিনাকে সরানোর জন্য ছিল না, এটা ছিল স্বৈরতন্ত্র ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের মুক্তির লড়াই। এ লড়াই এ নাগরিক কমিটি হবে একটি গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক দল। যেখানে জনগণের মতামতই হবে নীতিনির্ধারণের ভিত্তি। যে দল ক্ষমতায় গেলে জনগণের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। রাজনীতি শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, জনগণের সমস্যার সমাধানের জন্য। জাতীয় নাগরিক কমিটি জনগণের মতামতের ভিত্তিতে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায়।অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করা জরুরি। আমাদের আন্দোলনের সফলতায় বর্তমানে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে, যার মূল লক্ষ্য একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা।
আমাদের এখন দায়িত্ব-এই সরকারকে সহযোগিতা করা, যেন তারা স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠন করা, যাতে ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচার রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে না পারে।
জকিগঞ্জবাসীর প্রতি আহ্বান আপনারা আমাদের ক্যাম্পেইনে অংশ নিন, মতামত জানান, আন্দোলনকে শক্তিশালী করুন।আমাদের লক্ষ্য গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আসুন, সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যাত্রায় শামিল হই”।
মতবিনিময় সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডাক্তার গোলাম কিবরিয়া। জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আশরাফুজ্জামান রাদী।
বক্তব্য রাখেন আলী হোসেন, ডাক্তার রুবেল আহমদ, তারেক আহমদ ও মাজেদ আহমদ।
সভায় জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইমরান হোসেন, আনহার হোসেন, লিমন আহমদ,আব্দুল হাফিজ ও নাজির আহমদ আফজাল।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন শাহরিয়ার ইমন, আবু হুরায়রা মারজান, দিদারুল ইসলাম দিলু, নাহিদ আহমদ, ডাক্তার মিনহাজ উদ্দীন, মিজানুর রহমান, সাব্বির আহমদ, জাহেদ আহমদ, মাজেদ আহমদ, ইকবাল আহমদ, রিফাত আহমদ, আফজল আহমদ, তাওহিদুল ইসলাম, নাইম আহমদ, তুহিন মস্তফা, গুলজার আহমদ ও তাহমিদ আহমদসহ আরো অনেকে।
Leave a Reply