জকিগঞ্জের প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ ইসলামী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী মরহুম রেদ্বওয়ান মাহমুদ চৌধুরী স্মরণে এক হৃদয়স্পর্শী গজল সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে ইছামতি শাহী ঈদগাহ মাঠে রেদ্বওয়ান মাহমুদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। ইছামতির স্নিগ্ধ প্রান্তরে, সন্ধ্যার আকাশে আযানের ধ্বনি মিলিয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় স্মরণসভা। গজলের সুরে, ক্বিরাতের মাধুর্যে ও নাশীদের গানে তরুণ এই প্রতিভাবানের স্মৃতিচারণায় এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আল হাবিব লতিফিয়া কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাওলানা মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান ফুলতলী। সভাপতিত্ব করেন মরহুমের পিতা মাওলানা আহমদ আল কবির চৌধুরী।
আহমদ আল মনজুর ও আহমদুল হকের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ক্বিরাত পরিবেশন করেন ক্বারী মুজাম্মিল আহমদ ও ক্বারী মারুফ আহমদ। নাশীদ পরিবেশন করেন কবি ও সুরকার মুজাহিদুল ইসলাম বুলবুল, হাফিজ ফরহাদ আহমদ, আব্দুল ওয়াদুদ ময়নুল, মাহমুদ আব্দুল কাদির, শামসুল হাসনাত, কামরান হোসাইন, শাহ মিফতাউল ইসলাম, মুস্তফা আহমদ, মামুনুর রহমান, হাফিজ ফজল মাহমুদ, আহমদুল হক, রিয়াদুর রহমান চৌধুরী, সুজন উদ্দিন ও হবিবিয়া শিল্পী গোষ্ঠী।
বক্তারা বলেন, রেদ্বওয়ান মাহমুদ চৌধুরী ছিলেন এক বহুমাত্রিক প্রতিভাবান তরুণ। তিনি একাধারে সাংবাদিক, ছড়াকার, আবৃত্তিকার এবং ইসলামী সংস্কৃতিচর্চার এক নিবেদিত প্রাণ কর্মী ছিলেন। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে, যা তরুণ সমাজকে অনুপ্রাণিত করেছে। রিসালাহ শিল্পী গোষ্ঠীর আবৃত্তি পরিচালক হিসেবে তিনি ইসলামী সাহিত্য ও নৈতিক সংস্কৃতির প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
মাত্র ২২ বছর বয়সে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় এই টগবগে তরুণের অকাল প্রয়াণে জকিগঞ্জবাসী গভীরভাবে শোকাহত হয়। তার প্রস্থান যেন এক অসময়ে নিভে যাওয়া দীপ্ত প্রদীপের মতো—যার আলো আজও মানুষকে পথ দেখায়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মুফতি বেলাল আহমদ, ইছামতি কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ শিহাবুর রহমান চৌধুরী, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সেলিম, দৈনিক কালবেলা ও একাত্তরের কথা প্রতিনিধি এনামুল হক মুন্না, দৈনিক ইনকিলাব ও পূণ্যভূমি প্রতিনিধি জুবায়ের আহমদ, কাজলসার ইউপি আল ইসলাহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহীম কামালী, ইছামতি কামিল মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা ওয়ারিস উদ্দিন তাপাদার, যুব জমিয়ত নেতা মীম সালমান, ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ চৌধুরী, প্রবাসী আব্দুল জব্বার চৌধুরী, সাবেক তালামীয সভাপতি মাওলানা আবু সুফিয়ান, জামায়াতে ইসলামি নেতা মাওলানা জুবায়ের আহমদ, জকিগঞ্জ টিভির এমডি আব্দুল মুকিত, পরিচালক জামাল আহমদ, দৈনিক জাগ্রত সিলেটের প্রতিনিধি আহমদ হোসাইন আইমান, সীমান্ত জার্নালের কবি হাবিবুল্লাহ মিসবাহ, স্বপ্নের টিভির পরিচালক সাইফুর রহমান, দৈনিক আলোকিত সিলেটের প্রতিনিধি তানিম আহমদ, সংবাদকর্মী জেএফ চৌধুরী ফাহিম, মানবসেবা ফাউন্ডেশনের সদস্য মাওলানা আকতারুজ্জামান, রেদ্বওয়ান মাহমুদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের সদস্য মিসবাহ চৌধুরী, মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, আব্দুল হাসিব প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রেদ্বওয়ান মাহমুদ চৌধুরী ছিলেন জকিগঞ্জের গর্ব। তার কর্ম, চিন্তা ও সৃষ্টিশীলতা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। তাঁর নাম উচ্চারিত হবে ইসলামী সংস্কৃতি, আবৃত্তি ও গণমাধ্যমচর্চার এক উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে।
Leave a Reply