দু’টি গাভী ও দু’টি বাছুর নিজের সন্তানের মত লালন-পালন করেছেন চিকিৎসকের গাড়ি চালক রাহাত আহমদ। নিজের পিতা ও পরিবারের লোকজনকে গরুর দুধ খাওয়ানো এবং ভবিষ্যতে গরু বিক্রি করবেন বলে এখন থেকেই সেবাযত্ন বেশি করতেন তিনি। পেশায় গাড়ি চালক রাহাত আহমদ কার চালানোর সময় বাদ দিয়ে বাকি সময় গরু ৪টির যত্ন-পরিচর্যায় ব্যয় করতেন। তিনি থাকতেন গোয়াল ঘরের সাথে সংযুক্ত একটি রুমে। গরুর দেখা শোনা আর যত্ন নেয়াই ছিল তাঁর নেশা। গরু ৪টির মধ্যে একটি গাভীর পেটেও বাচ্চা ছিল। গরুগুলো নিয়ে তাঁর স্বপ্ন ছিল অনেক। কিন্তু রাহাত আহমদের স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। গভীর রাতে গোয়াল ঘরে লাগা আগুনে পুড়ে দু’টি গাভী-ই ভস্মীভূত হয়ে গেছে। বেঁচে থাকা দু’টি বাছুরের একটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। সন্তানের মত লালন-পালন করা গাভী দু’টি হারিয়ে এখন পাগল প্রায় রাহাত আহমদ।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ৩টার দিকে জকিগঞ্জ উপজেলার ৮নং কসকনকপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত হাতিডহর নগরকান্দি গ্রামের আব্দুল মালিক (নুমান মিয়া)’র বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
বাড়ির লোকজন জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে হঠাৎ করেই রাহাত আহমদের গরুর ঘরে আগুন জ্বলে ওঠে। মুহূর্তে তা সারা ঘর ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঘরে রাহাত আহমদ না থাকায় প্রতিবেশী ঘরের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এরই মধ্যেই গোয়াল ঘরে থাকা দু’টি গাভী পুড়ে মারা যায়। এছাড়াও রাহাত আহমদের ঘরের খাট-পালং, পানির মোটর, কাপড়-চোপড় সহ পুরো ঘর পুড়ে যায়। তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বা কারা আগুন লাগিছে তা কেউ দেখেননি।
গাড়ি চালক রাহাত আহমদ বলেন, আমি আমার গাড়ি মালিক ডা. মোয়াজ্জেম ইসলামকে নিয়ে সিলেটের বাহিরে গিয়েছিলাম। বাড়িতে থাকলে আমি নিজেও পুড়ে যেতাম। সর্বনাশা আগুন আমার সব কেড়ে নিয়েছে। গাভী, ঘর ও ঘরের মালামাল পুড়ে আমার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি জকিগঞ্জ থানা পুলিশকে অবগত করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান।
Leave a Reply