1. admin@zakiganjsangbad.com : admin :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জকিগঞ্জে জামিয়া দারুল ইহসান-এর কৃতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান ও শোকরানা মাহফিল অনুষ্ঠিত সিলেটে নগরীর মজুমদারীতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট ২ তরুণীকে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে জকিগঞ্জের জামালপুর শ্রী শ্রী রাধা মদন গোপাল আশ্রমে শ্রী শ্রী গুরু ব্রজকিশোর দাসের শীলা মূর্তি স্থাপন জকিগঞ্জের কাজলসার ইউপি’র বিভিন্ন গ্রামের প্রবেশমূখে নামফলক স্থাপন করেছে চৌধুরী বাজার প্রবাসী পরিষদ বিদেশে পাঠানোর কথা বলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জকিগঞ্জের শাহগলীতে মানববন্ধন ঈদে জমে উঠেছে জকিগঞ্জের জান্নাত এন্টারটেইনমেন্ট পার্ক জকিগঞ্জে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন মিলন আর নেই জকিগঞ্জে দুই মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত জকিগঞ্জে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনকল্যাণ সোসাইটি, জকিগঞ্জ-এর ঈদ উপহার বিতরণ জকিগঞ্জে মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী এমপি’র ঈদ উপহার বিতরণ

আজ জকিগঞ্জ মুক্ত দিবস: রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবী

রহমত আলী হেলালী
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১
  • ৯৪০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

আজ সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ২১শে নভেম্বর দেশের এই প্রান্তিক জনপদ পাক বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল। জকিগঞ্জ-ই দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল হিসেবে স্থানীয়ভাবে এই দিনকে উপলক্ষ করে বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়ে আসছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই স্বীকৃতি পায়নি জকিগঞ্জবাসী। এনিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবীদ, শিক্ষাবীদ ও জনপ্রতিনিধি সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে ছাত্রদের নেতৃত্বে স্বাধীনতার পক্ষে জকিগঞ্জে প্রথম মিছিল বের হয়। আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানের পতাকা। কিন্তু স্বাধীনতার কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও সেই স্বীকৃতির অপেক্ষা করছেন এই অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বস্থরের মানুষ। স্বাধীন দেশের প্রথম বিজয়ের প্রভাতে নিঃশ্বাস নেয়া এই অঞ্চলের লাখো লাখো মানুষের দাবিও এখন জকিগঞ্জকে প্রথম মুক্তাঞ্চলের স্বীকৃতি প্রদানের।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, দেশের প্রথম মুক্তাঞ্চল দিবস এদিন-ই। দিবসটি উপলক্ষে আজ রোববার জকিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডসহ অনান্য সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ও কেন্দ্রেীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পন, সকাল সাড়ে ১১টায় র‌্যালি, দুপুর ২টায় মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিচারণ করে আলোচনা সভা, আড়াইটার সময় মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে শান্তি ও সম্প্রীতির মানববন্ধন। তাছাড়াও কাল থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম মুক্তাঞ্চলের দাবী আদায়ের লক্ষে ও জনসচেনতা সৃষ্টির জন্য পথসভা চলবে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাবেক পৌর মেয়র হাজী মোঃ খলিল উদ্দিন জানান, দেশব্যাপী যুদ্ধ শুরুর আগে সিলেটের সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জকে শত্রু মুক্ত করার শপথ নেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। সে মতে ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর রাতে যৌথ বাহিনীর এক সাঁড়াশি অভিযানের ফলে ২১ নভেম্বর ভোরে মুক্ত হয় জকিগঞ্জ। মুক্তিযুদ্ধে জকিগঞ্জ ছিল ৪ নং সেক্টরের অন্তর্ভূক্ত। অধিনায়ক ছিলেন মেজর চিত্ত রঞ্জন দত্ত। প্রয়াত সাবেক মন্ত্রী এমপি দেওয়ান ফরিদ গাজী ছিলেন এই সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা। ৬টি সাব সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন মাহবুব রব সাদী, লে. জহির উদ্দিন ও ক্যাপ্টেন এম.এ.রব। ২৭ মার্চ জকিগজ ডাক বাংলোয় এক গোপন বৈঠকে থানার সকল ইপিআর ক্যাম্পের পাক সেনাদের খতমের সিদ্ধান্ত হয়। ২৮ মার্চ বীর মুক্তিযোদ্ধা মেকাই মিয়া, চুনু মিয়া, আসাইদ আলী, ওয়াতির মিয়া, তজমিল আলী, মশুর আলী, হাবিলদার খুরশিদ, করনিক আবদুল ওয়াহাব, সিগনালম্যান আবদুল মোতালেব প্রমুখ প্রথমে জকিগঞ্জ ও মানিকপুর ইপিআর ক্যাম্পে অপারেশন চালিয়ে পাক সেনাদের খতম করে জকিগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেন। প্রয়াত এমপি দেওয়ান ফরিদ গাজী, এমএলএ মরহুম আবদুল লতিফ, এমএলএ আব্দুর রহিম, সেক্টর কমান্ডার চিত্ত রঞ্জন দত্ত, মিত্র বাহিনীর দায়িত্ব প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার ওয়াটকে, কর্নেল বাগচিসহ মাছিমপুর ক্যান্টলম্যান্টে জকিগঞ্জকে স্বাধীন করার এক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ঐ পরিকল্পনা ছিল কীভাবে কুশিয়ারা নদীর ওপারে ভারতের করিমগঞ্জের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে জকিগঞ্জ দখল করা যায় এবং এ পরিকল্পনা মতোই জকিগঞ্জ মুক্ত হয়।
ভারতের বিহার প্রদেশের চাকুলিয়ায় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও মুক্তাঞ্চলের প্রথম আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার জকিগঞ্জের কৃতি সন্তান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জকে মুক্ত করার পরিকল্পনা অনুসারে ২০ নভেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে প্রথম দল লোহারমহলের দিকে ও দ্বিতীয় দল আমলশীদের দিকে অগ্রসর হয়। মূল দল জকিগঞ্জের কাস্টমঘাট বরাবর করিমগঞ্জ কাস্টম ঘাটে অবস্থান নেয়। প্রথম ও দ্বিতীয় দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে কুশিয়ারা নদী অতিক্রম করে জকিগঞ্জের দিকে অগ্রসর হয়। পাক বাহিনী খবর পেয়ে দিকবিদিক ছুটোছুটি শুরু করে। মুক্তিবাহিনী তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে ভেবে তারা আটগ্রাম-জকিগঞ্জ সড়ক দিয়ে পালাতে থাকে। ইতিমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় দল জকিগঞ্জ পৌঁছে যায়। মূল দল কুশিয়ারা নদীতে রাবারের বালিশ দিয়ে সেতু তৈরি করে জকিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। তখন পাক সেনাদের বুলেটে শহীদ হন ভারতীয় বাহিনীর মেজর চমন লাল ও তার দুই সহযোগী। এ সময় কয়েকজন পাক সেনাকে আটক করা হয়। এভাবেই মুক্ত হয় জকিগঞ্জ। একুশে নভেম্বর ভোরে জকিগঞ্জের মাটিতেই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়িয়ে দেন মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক আটকৃত বন্দীদের জকিগঞ্জ থানা থেকে মুক্ত করা হয়।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
জকিগঞ্জ সংবাদ-এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
প্রতিষ্ঠাতা: রহমত আলী হেলালী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায় সিসা হোস্ট