জকিগঞ্জের এক গৃহবধুকে সিলেটে রাতভর নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দিতে স্ত্রীকে বাসার জানালার গ্রীলে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন স্বামী এমন অভিযোগ স্ত্রীর পরিবারের। এ ঘটনায় পুরো সিলেট জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (১৬ জুলাই) ভোরে সিলেট নগরীর বালুচর আরামবাগ এলাকার ৭-২ রশিদ মঞ্জিলে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত ১৫ই জুলাই রাত আনুমানিক ১০টার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সফি আহমদ চৌধুরী সুমন তার স্ত্রী নিশাত ফাতেমা চৌধুরীকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারে। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত পান নিশাত। এরপর বুধবার ভোর ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে অভিযুক্ত স্বামী নিশাতের ফুফাতো ভাইকে ফোন করে জানায় যে, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নিশাতের নিথর দেহ দেখতে পান। তবে নিহতের কপাল, গলা, দুই হাতের তালু ও বাহুতে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন এবং কালচে জখম দেখে সন্দেহ দানা বাঁধে। পরিবারের অভিযোগ, হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল অভিযুক্ত স্বামী। এ ঘটনার পর শাহপরান (রহ.) থানা পুলিশ সক্রিয় হয়। থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বুধবার সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থল আরামবাগের রশিদ মঞ্জিলে উপস্থিত হয়। এসআই হালিমা আক্তার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরে পুলিশ তদন্তের পর নিহতের স্বামী সফি আহমদ চৌধুরী সুমনকে গ্রেপ্তার করে।
আটক সফি আহমদ চৌধুরী সুমন সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ১নং বারহাল ইউনিয়নের পরচক গ্রামের মৃত মহিউদ্দিন আহমদ চৌধুরী (নুর মিয়া) ও নাদিরা চৌধুরীর ছেলে। বর্তমানে সুমন স্ত্রীসহ আরামবাগের ৭-২ রশিদ মঞ্জিলে বসবাস করছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (রহ.) থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, নগরীর বালুচরের একটি বাসা থেকে ২ সন্তানের জননী নিশাতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের শরীরে পরিস্কার আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পর নিহতের পিত্রালয়ের পক্ষ থেকে শাহপরাণ (রহ.) থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৪(৭)’২৫) দায়ের করা হয়। ওই মামলায় সফি আহমদ চৌধুরী সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।